মাসুদ রানা বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: সহপাঠীদের নিয়ে আলাপচারিতার এক ফাঁকে কিছু একটা খাবো বলে ইচ্ছে প্রকাশ করেন অনেকেই। কোথায় খাবেন কী খাবেন তা নিয়ে পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিতে মুখরোচক বা রসনা বিলাস খাবার খেতে কে না ভালোবাসে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় বন্ধুদের আড্ডায় আলু পরোটা খেতে। গত বুধবার নয়ন হাসান সহ এলাকার কয়েকজন ছোট ভাই হাঁটতে হাঁটতে কোন একসময় পৌছে গেলাম বিরামপুর রেলস্টেশন চত্ত্বরে। ছোট ভাইয়েরা বললো চলেন সবাই একসাথে রাজ্জাকের আলু পরোটা খাই।
আলু পরোটা খেতে খেতে কথা হয় আব্দুর রাজ্জাকের সাথে তিনি বলেন, আগে অন্যের হোটেলে কাজ করতাম, যা মাইনে পেতাম তা দিয়ে সংসার চালানো খুব কষ্টকর হতো। বুঝে উঠতে পারছিলাম না কী করবো। হাতে পয়সা কড়ি নেই, সংসারে অনেক চাহিদা। শেষমেষ বৌয়ের পরামর্শে বিরামপুর রেলস্টেশনে আলু পরোটার ব্যবসা শুরু করি। দিন দিন চাহিদা বাড়তে থাকায় আমাকেও ব্যবসার পরিধি বাড়াতে হয়। ৪ বছর ধরে এই ব্যবসা করছি। আলু পরোটার জন্য ভালো মানের ময়দা, আলু, ধনেপাতা, কাঁচামরিচ, তিল, বাদাম, শরিষা, শুটকীমাছ, তেল ও শুকনো খড়ি প্রতিদিন কিনতে হয়। বাড়িতে সবগুলো উপকরণ পর্যায়ক্রমে আলু পরোটার জন্য ময়দার খুমির প্রস্তুত করে বিভিন্ন রকম ভর্ত যেমন আলু ভর্তা, কাঁচা মরিচ ভর্তা,বাদাম ভর্তা, তিল ও শুটকি মাছের ভর্তা নিয়ে বিকেল ৫টায় বিরামপুর ষ্টেশনের দক্ষিণ পাশে মজাদার ও সুস্বাদু আলু পরোটার দোকান বসাই। সন্ধ্যে হলেই শহরের বিভিন্ন পাড়া ও মহল্লা থেকে বিভিন্ন বয়সের ছাত্র-ছাত্রী, নারী-পুরুষ সহ রেলস্টেশনে আগত যাত্রীগণ এখানে বসেই খাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ বাসা বাড়ির জন্য পার্সেল নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২৫০-৩০০ জন আলু পরোটা খেতে আসেন। প্রতিদিন দোকানে সব মিলে খরচ ১৭শ থেকে ১৮শ টাকা আর আয় হয় ২৬শ থেকে ২৮শ টাকা।
বকুলতলা মোড় থেকে আলু পরাটা খেতে আসা মরিয়ম আক্তার বলেন, সপ্তাহে ২-৩ দিন আলু পরাটা খেতে আসি, এখানকার আলু পরোটার স্বাদটাই আলাদা। টাটকপুর থেকে থেকে আলু পরাটা খেতে আসা মিলন ইসলাম বলেন, আমি এখানে প্রায় আলু পরোটা খেতে আসি। এখানকার আলু পরাটা খেতে মজাটাই আলাদা। বিভিন্ন প্রকারভর্ত্তার স্বাদটাই একেবারে অন্য রকম।
আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, এখন আলু পরোটার দোকান থেকে যা আয় করি তা দিয়ে বেশ সুন্দর আমার সংসার চলে। এই থেকে ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখার খরচ যোগান দিচ্ছি। আমি চেষ্টা করি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে মানসম্মত আলু পরোটা ও বিভিন্ন ভর্তা তৈরি করতে। সেজন্যই হয়তো খাবারের স্বাদে জন্য মানুষজন আলু পরোটা খেতে আসে।