পিঠা মানেই নবান্নের উৎসব। কবি গুরুর ভাষায়, অগ্রহায়ণে তোর ভরা ক্ষেতে কি দেখেছি মধুর হাসি। নতুন ধান মানেই, নতুন চাল। চাল মানে অন্ন। নতুন ধানের উৎসব বলে এর নাম নবান্ন। এই নবান্ন উৎসব বাঙালির চিরাচরিত এক অনাবদ্য, হৃদয়গ্রাহ্য উৎসব। যা বাঙলার ঘরে ঘরে নতুন প্রাণ, নতুন খুশি ও আনন্দের জোয়ার বয়ে দেয়। এদিকে শীত এলেই গ্রামের প্রতিটি ঘরে ঘরে পিঠাপুলির উৎসব শুরু হয়। তা-ই বলা চলে পিঠার ঋতু শীতকাল। বাংলার অকৃত্রিম খাবারের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিশাল অংশজুড়ে রয়েছে পিঠা। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে এ ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি প্রায় বিলীন।
দুধের স্বাদ ঘোলে মিঠানোর মতোই হাটে বাজারে মানুষ আসে পিঠার স্বাদ নিতে। তাই এখন হাটে বাজারে শীতের শুরুতে পিঠা বিক্রেতাদের দেখা মেলে। কথা হয় বোরহানউদ্দিনের পৌর এলাকার হাওলাদার মার্কেটের মৌসুমি পিঠা ব্যবসায়ী মোঃ হাসেম (৫২) এর সাথে। তিনি বলেন, এবারও পিঠা বিক্রিতে নেমেছেন। হাওলাদার মার্কেট ফুটপাতেই দোকান বসিয়েছেন তিনি। প্রায় চার বছর হলো তিনি শীত মৌসুমে পিঠার ব্যবসা করে আসছেন। বছরের অন্য সময় ফল বিক্রি করে সংসার চালান এ ব্যবসায়ী। শীত মমৌসুমে প্রতিদিন ৩৫০০ টাকা থেকে ৩৮০০ টাকা বিক্রি হয়ে থাকে। অনেক চাকরিজীবীরা পিঠা কিনতে আসে।
সরেজমিনে গতকাল (২১ নভেম্বর) রোববার সন্ধ্যায় বোরহানউদ্দিন বাজারের পোস্ট অফিস, খেয়াঘাট সহ বিভিন্ন এলাকায় পিঠা বিক্রির এমন চিত্রই দেখা গেছে।
এমন একটা সময়ে আমরা অবস্থান করছি, যখন বাংলার গ্রামাঞ্চলেও শহুরে জীবনের প্রভাব বেশ দৃশ্যমান। গ্রামীণ সংস্কৃতির অনেক কিছুই ভুলতে বসেছে আমাদের গ্রাম-বাংলা। শীত মৌসুমে পিঠা তৈরির সংস্কৃতি ও চর্চা আর আগের মতো নেই।
মোঃ সুমন মিয়া একজন হোটেল ব্যবসায়ী। তিনিও শীত মৌসুমে পিঠা বিক্রি করে সংসার চালান। তিনি প্রতিদিন ১৮০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকার পিঠা বিক্রি করেন।
প্রতিবেদককে পিঠা কিনতে আসা মোঃ রহমাতুল্লাহ ও আরিফ হোসেন বলেন, বাসা বাড়িতে এখন আগের মতো আর পিঠা তৈরির দৃশ্য দেখা যায় না। তাই বাজার থেকে কিনে নিয়ে যাই।