বরিশাল ব্যুরো : বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার অন্দারমানিক ইউনিয়নে বিদেশি জাতের বারোমাসি তরমুজ চাষ করে ব্যাপক ফলন পেয়েছেন মাষ্টার এইচ এম হাসান মাহমুদ সাঈদ। মাত্র ১০০ শতাংশ জমিতে ৫ জাতের তরমুজ চাষে ৫০ হাজার টাকা খরচে করে ২ লক্ষ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি। দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন তার তরমুজ চাষ প্রকল্প দেখতে এসে অনুপ্রানীত হচ্ছেন অনেকে। উন্নত মানের বীজের কারণে ফলন ভালো হয়েছে দাবি করেন সংশ্লষ্টিরা। বারোমাসি তরমুজ চাষ করলে অন্যান্যরা লাভবান হবে এবং বেকারত্ব দূর হবে আশা কৃষি কর্মকর্তাদের।
জানা যায়, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার আন্দারমানিক গ্রামের বাসিন্দা, হাসান মাহমুদ সাঈদ এবং তার স্ত্রী মোসাম্মৎ তাহমিনা দুই জনই দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। সাঈদ শিক্ষকতার পাশাপাশি মাছ চাষ শুরু করেন। এখন তার ৪টি পুকুর, ২টি ঘের এবং পোনা উৎপাদনের একটি হ্যাচারী রয়েছে। ঘের এবং পুকুর পাড়ে আগে থেকেই বিভিন্ন সবজীর চাষ করে আসছেন তিনি। করোনাকালে স্কুল বন্ধ থাকায় একজন বীজ ব্যবসায়ীর পরামর্শে গত আষাঢ় মাসে বিদেশী জাতের ৫ ধরনের তরমুজ জাতীয় ফলের চাষ করেন তিনি।
সাঈদ জানান, হলুদ তরমুজ কানিয়া, লাল তরমুজ বেঙ্গল টাইগার, লাল তরমুজ সুইট ব্লাক, রক মেলন এরোমা সুইট, রক মেলন রিয়া জাতের এই চারা রোপনের ১ সপ্তাহের মধ্যে ফুল এবং ১০/১২ দিনের মধ্যে ফলন ধরে প্রতিটি গাছে। ২ মাস পরই ফল পরিনত এবং পাঁকা শুরু হয়। ১০০ শতাংশ জমিতে চারা রোপনসহ পরিচর্যায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয় তার। ৫-৬ টন তরমুজ উৎপাদন হওয়ার আশা করেন তিনি। প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি করা হচ্ছে ৬০-১০০ টাকা দরে। ফল বিক্রি করে ২ লাখ টাকা লাভের আশা করছেন মাষ্টার এইচ এম হাসান মাহমুদ সাঈদ।
সাঈদের কৃষি শ্রমিক মো. কাদের বলেন, বিদেশী জাতের এই তরমুজ চাষে বাড়তি কোন ঝামেলা নেই। বীজ ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে টিস্যু দিয়ে মুড়িয়ে রেখে অঙ্কুর গজালে একটি ট্রেতে জৈব সার সহ মাটিতে পুতে দিতে হয়। ট্রেতে ১০/১২ রেখে চারা গজানোর পর নিয়মানুযায়ী পৃথক বেড তৈরী করে চারা রোপন করতে হয়। লাল ও হলুদ রংয়ের এই তরমুজ খেতেও সুস্বাধু বলে তিনি জানান।
এদিকে বিদেশী জাতের তরমুজের ব্যাপক ফলনের খবরে দেখতে আসছেন দূর-দূরান্তের অনেকেই। বিদেশী জাতের তরমুজ চাষ দেখে নিজেরাও এই ধরনের প্রকল্প করতে অনুপ্রানীত হয়েছেন বলে জানান।
মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উপ কৃষি কর্মকর্তা মো. আল মামুন জানান, বারোমাসি তরমুজ চাষের জন্য আমরা মাষ্টার এইচ এম হাসান মাহমুদ সাঈদকে কারিগরিসহ সর্বাত্মক সহযোগিতা করছি। সাঈদ বিদেশি জাতের তরমুজ চাষ করে লাভবান হয়েছে। অন্যারাও এই ফলের চাষ করলে লাভবান হবে এবং বেকারত্ব দূর হবে আশা কৃষি বিভাগের।