বরিশাল প্রতিবেদক: নগরীর খালগুলো ভরাটের পাশাপাশি একে একে ভরাট হয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী পুকুরগুলো। ইতোমধ্যে নগরীর অসংখ্য ঐতিহ্যবাহী পুকুরের নাম-নিশানা পর্যন্ত হারিয়ে গেছে। ভূমি দখলকারীদের থাবায় শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী অসংখ্য পুকুর ভরাট হয়ে গেছে। মাত্র ১৪/১৫ বছরের ব্যবধানে একে একে পুকুর ভরাট করে বাড়িঘর ও বহুতল মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। এমনকি সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের ভবন পর্যন্ত পুকুর ভরাট করে নির্মাণ করা হয়েছে। সূত্রমতে, নগরীর ঐতিহ্যবাহী বড় পুকুরগুলোর মধ্যে কাউনিয়া ব্রাঞ্চ রোডের দ্বিতীয় পুকুরটি ২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি এক রাতেই ভরাট করা হয়। একই প্রক্রিয়ায় ভরাট করা হয়েছে শ্রীনাথ চ্যাটার্জী লেনের দু’টি পুকুর। বঙ্গবন্ধু উদ্যান সংলগ্ন এলাকার একটি পুকুর ভরাট করে নির্মাণ করা হয়েছে মডেল স্কুল এন্ড কলেজ। আমানতগঞ্জে ইসলামিয়া কলেজের পুকুরটি ভরাট করা হয়েছে তিন বছর আগে। বর্তমানে দখল প্রক্রিয়ায় থাকা পুকুরগুলোর মধ্যে মল্লি¬ক রোডের পুলিশ ক্লাব সংলগ্ন বিশাল পুকুরটির অর্ধেক হজম হয়ে গেছে। সূত্রে আরও জানা গেছে, পুকুরের মতোই ভরাট ও দখল হয়ে গেছে নগরীর ঐতিহ্যবাহী খালগুলো। একসময়ে নগরীর সাথে আশেপাশের এলাকার যোগাযোগ মাধ্যম ছিল খালগুলো। এরমধ্যে অন্যতম জেল খাল, ভাটিখানার খাল, ভাটার খাল, সাগরদী খাল, লাকুটিয়া খাল, আমানতগঞ্জ খাল, কাউনিয়া ও বটতলা খাল দিয়ে বড় বড় নৌকায় মানুষ যাতায়াত করার পাশাপাশি পণ্য আনা-নেয়া করতো। সেসব খালের দু’পাড়েই নানা স্থাপনা তৈরি করে ভূমিদস্যুরা জবর দখল করে নিয়েছে। কীর্তনখোলা নদী ভরাট হয়ে পোর্ট রোড ও লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকায় যে চর জেগে উঠেছে তা দখল করে মিনি শহর তৈরি করেছেন ভূমিগ্রাসীরা। রসুলপুর ও মোহম্মদপুর নামে দু’টি চরে বসতি গড়ে উঠেছে একযুগেরও বেশি সময় আগে। পোর্ট রোড থেকে কীর্তনখোলা নদীর সাথে সংযোগ রক্ষাকারী খালটির জমি দখল করেই স্থানীয় একটি ব্যবসায়ী সমিতি গড়ে তুলেছেন বহুতল ভবন। এ ব্যাপারে পরিবেশবাদীরা একাধিকবার সভা, সমাবেশ ও মানববন্ধন করেও কোন প্রতিকার পাননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিআইডব্লি¬¬উটিএ’র স্থানীয় একাধিক কর্মকর্তারা জানান, কীর্তনখোলা নদীর তীর ঘেঁষে নগরীর ত্রিশ গোডাউন বধ্যভূমি এলাকা থেকে বেলতলা খেয়াঘাট পর্যন্ত বিশাল এলাকা জুড়ে ৩৬ দশমিক ৫ একর সম্পত্তি বর্তমানে বেদখল রয়েছে। ত্রিশ গোডাউন সংলগ্ন বাংলাদেশ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, যমুনা অয়েল কোম্পানী, বালুর মাঠ বস্তি, চাঁদমারী, কেডিসি, ভাটারখাল বস্তি, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন, পোর্টরোড মৎস্য বাজার ও বেলাতলা খেয়াঘাটের ডকইয়ার্ডসহ বিভিন্ন এলাকায় দখল করে রাখা সাড়ে ৪’শ দখলদারের একটি তালিকা ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের কাছে জমা দেয়া হয়েছে।