ফরিদপুর জেলার মধুখালিতে “শ্যালিকার সঙ্গে পরকীয়ার জেরে দুলাভাইকে নৃশংসভাবে হত্যা” শীর্ষক চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার পলাতক প্রধান আসামি আশারুল শেখ এবং তার প্রধান সহযোগী ইলিয়াস শেখ ও খায়রুল শেখকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০।
ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানাধীন হাটঘাটা এলাকার নিজামউদ্দিন একই থানাধীন পার্শ্ববর্তী দিঘলিয়া এলাকায় মৃত জাহিদুল শেখের মেয়ে জামেলা খাতুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পর নিজাম তার শ্যালিকা জলি খাতুনের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি জলি খাতুনের অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়। নিজাম গত ২১ মার্চ সকালে তার শ্যালিকা জলিকে সঙ্গে নিয়ে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি অসুস্থ এক আত্মীয়কে দেখতে যান। সেখান থেকে জলিকে নিয়ে নিজাম তার বাড়িতে যায়। বিষয়টি জানতে পেরে ওইদনি রাতে জলির পরিবারের লোকজনসহ ৯-১০ জন মধুখালীর হাটঘাটা এলাকার নিজামের ঘরে প্রবেশ করে নিজামের শ্যালক শরিফুলসহ বেশ কয়েকজন মিলে নিজামকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে জলিকে নিয়ে যায়। অতঃপর নিজামের আত্মীয়স্বজন ও আশপাশের লোকজন নিজামকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে নিজামের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক নিজামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঐদিন রাতেই ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পথিমধ্যে রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় পৌছালে এ্যাম্বুলেন্সের ভিতর নিজাম মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনায় মৃত নিজামের ভাই মোঃ আজিম উদ্দিন শেখ বাদী হয়ে ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানায় চাঞ্চল্যকর নিজামউদ্দিন হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত মোঃ শরিফুল শেখ ও মোসাঃ তথি বেগমসহ ৯-১০ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে র্যাবের একটি আভিযানিক দল জেলার কোতোয়ালি এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে এ হত্যা মামলার যথাক্রমে ৫নং ও ৬নং পলাতক আসামি মোঃ শরিফুল শেখ (২০) ও মোসাঃ তথি বেগমকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তি ও তাদের দেয়া তথ্যমতে র্যাব-১০ গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর নিজামউদ্দিন হত্যা মামলার ০১, ০২ ও ০৪ নং এজাহারনামীয় পলাতক আসামি মোঃ আশারুল শেখ (২৮), মোঃ ইলিয়াস শেখকে (২৪) গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিরা উক্ত হত্যাকান্ডে তাদের সরাসরি সম্পৃক্তার কথা স্বীকার করেছে।