ছাত্রলীগ নেতার হাতে খু/ন: ৬ স্থান থেকে যুবকের ৯ খন্ড লা/শ উদ্ধার
3, February, 2024, 4:08:30:PM
আকরামুজ্জামান আরিফ, কুষ্টিয়া:
কুষ্টিয়ায় অভিযান চালিয়ে শহরতলী হাটশ হরিপুর পদ্মা নদীর চর থেকে মিলন আলী (২৪) নামের এক যুবকের খন্ডিত লা/শ উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাশের নয়টি খন্ড পৃথক ছয় জায়গায় পুঁতে রাখা হয়েছিল। শনিবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের কান্তিনগর বোয়ালদহ সংলগ্ন পদ্মার চর থেকে লাশের টুকরোগুলো উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, চাঁদার দাবিতে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সাবেক সহ সভাপতি এস কে সজিবের নেতৃত্ব এই হ/ত্যাকান্ডটি ঘটানো হয়েছে। পুলিশ সজিবসহ পাঁচজনকে আটক করেছে।
নিহত যুবকের নাম মিলন হোসেন (২৪)। তিনি দৌলতপুর উপজেলার পূর্ব বাহিরমাদি গ্রামের মওলা বক্সের ছেলে। তিনি পরিবার নিয়ে কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং ই ব্লকের ভাড়া বাসায় থাকতেন।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) পলাশ কান্তি নাথ জানান, ৩১ জানুয়ারি (বুধবার) সকালে মিলন বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। ঐ দিন সন্ধ্যায় তার স্ত্রী মুমো খাতুন কুষ্টিয়া মডেল থানায় জিডি করেন। জিডির প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। মুঠোফোনের একটি কল লিস্টের সূত্রধরে প্রথমে মিলনের এক বন্ধুকে আটক করা হয়। তার স্বীকারোক্তিতে জানা যায় আরেক বন্ধু সজিবের নেতৃত্বে মিলনকে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে শুক্রবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে সজিবসহ আরো চারজনকে আটক করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা মিলনকে হত্যা করে তার লাশ টুকরো টুকরো করে নদীর চরে পুতে রাখার বিষয়টি স্বীকার করে। এরপর শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে তাদেরকে নিয়ে হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের কান্তিনগর বোয়ালদহ পদ্মা নদীর চরে অভিযানে যায় পুলিশ। রাতভর অভিযান চালিয়ে নদীর চরের ছয়টি স্থান থেকে মিলনের খন্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র বাঁধ বাজার এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
তিনি আরো জানান, জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, টাকার দাবিতে মিলনকে হত্যা করা হয়েছে। জড়িতরা সবাই একে অপরের পরিচিত। মিলন বাড়ি থেকে অনলাইনে কাজ করতো। নিখোঁজের দিন তাকে মুঠোফোনে ডেকে হাউজিং এলাকার একটি বাড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। ঐদিন রাতেই তাকে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ গুম করার সুবিধার্থে ধারালো অস্ত্র দিয়ে লাশ টুকরো টুকরো করে নদীর চরে পুতে রাখা হয়েছিল। আর এই পুরো হত্যাকান্ডটির নেতৃত্ব দিয়েছে তারই বন্ধু সজিব। এর সাথে অন্যকোন ঘটনা আছে কিনা তা নিয়ে আরো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, এস কে সজিব কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ছিলেন। কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ভাংচুর ও ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের মারধরের অভিযোগে তাকে বহিস্কার করা হয়। সেই মামলায় জেল খেটেছে সে। এছাড়া তার নামে চাঁদাবাজিসহ বেশ কিছু মামলাও রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাউজিং এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছে, সজিবের নামে অনেক অভিযোগ রয়েছে। তার নেতৃত্বে একটি কিশোর গ্যাং পরিচালিত হয়। মিলন নামে যাকে হত্যা করা হয়েছে সেও তাদের মতোই ছিল। তাদের কাজ ছিল ছেলে মেয়েদের ব্ল্যাকমেইল করে চাঁদা দাবি করা।