১১ বছরেও শেষ হয়নি খুলনার জেলা কারাগারের নির্মাণ কাজ
20, December, 2022, 6:16:36:PM
খুলনা প্রতিনিধি খুলনার নতুন জেলা কারাগারের নির্মাণ কাজ দীর্ঘ ১১ বছরেও শেষ হয়নি। ইতোমধ্যে কারাগারে বন্দি ব্যারাক, কারারক্ষীদের স্টাফ কোয়ার্টারসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য কাজে ধীরগতির কারণে আগামী বছরের জুনেও কাজ শুরু হবে না- আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গণপূর্ত বিভাগ থেকে জানা গেছে, খুলনার সিটি (রূপসা সেতু) বাইপাস সড়কের জয়বাংলা মোড়ের অদূরে প্রায় ৩০ একর জমির ওপর নতুন কারাগার নির্মাণ হচ্ছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ২৮৮ কোটি টাকা। ২০১১ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের কাজ ২০১৫ সালের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিলো। সম্প্রতি নির্মানাধীন নতুন কারাগার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় ৩০ একর জায়গার ওপর নতুন এক শহর তৈরি হচ্ছে। কারাগারের মূল সীমানার ভেতর শুধু ভবন আর ভবন। অনেক আগেই ভবনের মূল কাঠামো নির্মাণ শেষ হয়েছে। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত অবস্থায় থাকায় প্রতিটি স্থাপনায় মরিচা পড়েছে। দেখা গেছে, কারাগারে ৪ তলা হাসপাতাল ভবন, দুই তলা স্কুল ভবন, পয়ঃবর্জ্য শোধনাগারের কাজ প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ওয়াকওয়ে, অভ্যন্তরীণ সড়ক ও ড্রেনের কাজ এখনও শুরু হয়নি। ভবনগুলোর অবকাঠামোর কাজ শেষ হলেও বিদ্যুৎ, পানি, স্যানিটেশন, রঙসহ ফিনিশিংয়ে সব কাজই বাকি রয়েছে। সাধারণত এসব কাজেই সময় লাগে বেশি।
প্রকল্প অফিস থেকে জানা গেছে, খুলনার নতুন এই কারাগার নির্মাণ হচ্ছে সংশোধনাগার হিসেবে। এখানে বিচারাধীন ও সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের পৃথক স্থানে রাখা হবে। কিশোর ও কিশোরি বন্দিদের জন্য রয়েছে পৃথক ব্যারাক। মহিলাদের জন্য পৃথক হাসপাতাল, মোটিভেশন সেন্টার, ওয়ার্কশেড থাকবে। একইভাবে পুুরুষ বন্দিদের জন্য ৫০ শয্যার হাসপাতাল থাকবে। আরও থাকবে কারারক্ষীদের সন্তানদের জন্য স্কুল, বিশাল লাইব্রেরি, ডাইনিং রুম, আধুনিক সেলুন ও লন্ড্রি। কারাগারে শিশুসহ মা বন্দিদের জন্য থাকবে পৃথক ওয়ার্ড ও ডে-কেয়ার সেন্টার। এ ওয়ার্ডটিতে সাধারণ মহিলা বন্দি থাকতে পারবে না। সেখানে শিশুদের জন্য লেখাপড়া, খেলাধুলা, বিনোদন ও সংস্কৃতিচর্চার ব্যবস্থা থাকবে। কারাগারে পুরুষ ও নারী বন্দিদের হস্তশিল্পের কাজের জন্য আলাদা আলাদা ওয়ার্কশেড, বিনোদন কেন্দ্র ও নামাজের ঘর থাকবে।
এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক মোক্তার আহমেদ বলেন, ১১ বছরেও কাজ শেষ না হওয়ায় আমরা বিব্রত। সংশ্লিষ্টদের দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নির্মাণ কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা খুলনা গণপূর্ত বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাজিবুল ইসলাম বলেন, প্রকল্প ২০১১ সালে পাশ হলেও মূল অবকাঠামোর কাজ শুরু হয়েছে ২০১৭ সালে। এর মধ্যে করোনার কারণে দুই বছর কাজ বন্ধ ছিলো। তবে এখন দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। ভবনের কাজ সব শেষ। হাসপাতাল ও স্কুলের কাজও দ্রুত চলছে। সড়ক, ড্রেনসহ অন্যান্য কাজও নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হবে।