কথার যৌক্তিক যুদ্ধে কোনো বিষয়ের ওপর যুক্তি, তথ্য ও উপাত্তের ভিত্তিতে চুলচেরা বিশ্লেষণই হলো বিতর্ক। আর প্রতিপক্ষকে সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা করে যৌক্তিক গঠনমূলক ও প্রজ্ঞাপূর্ণ বিতর্ক উপস্থাপন করাই হচ্ছে একজন বিতার্কিকের প্রধান কাজ। প্রাচীনতম বিতর্কচর্চার এই শিল্পের প্রচার-প্রসারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে নিয়মিত চলে তর্ক-বিতর্ক চর্চা। সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে ২৫ তম জাতীয় টেলিভিশন বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২৪ এর প্রথম রাউন্ডে সরকারি বাংলা কলেজের বিপক্ষে ৩-০ ব্যালটে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেছে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
বাংলাদেশ টেলিভিশনের ঢাকা কেন্দ্রে শুক্রবার আয়োজিত প্রথম রাউন্ডে সরকারি বাংলা কলেজের বিতার্কিক দলকে হারায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের `বঙ্গমাতা তার্কিক পরিষদ` দলটি। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন দলের সদস্যরা। এসময় উপাচার্য বিতার্কিক দলের সদস্যদের প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সাহায্য-সহযোগিতার আশ্বাস দেন। শুভেচ্ছা বিনিময়কালে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার ও হলের ডিবেটিং ক্লাবের মডারেটর ড. বুশরা জামানসহ প্রতিযোগিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিতর্কের বিষয় ছিল ‘সাংস্কৃতিক সংকটই নারী নির্যাতনের প্রধান কারণ’। প্রতিযোগিতায় বিতার্কিকদের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মুনিয়া আক্তার যুথী ও নাঈমা আক্তার রীতা এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শারমিন সুলতানা নিশি। এদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক নির্বাচিত হয়েছেন প্রতিযোগিতার পক্ষ দলের দলনেতা শারমিন সুলতানা নিশি।
পাশাপাশি সহযোগী বিতার্কিক হিসেবে ছিলেন শিউলি আক্তার, নাদিয়া ফারহানা তিতলি, রিপা বানু ও আফিয়া আক্তার। বিতার্কিকদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ডিবেটিং ক্লাবের মডারেটর ড. বুশরা জামান।
অনুভূতি প্রকাশ করে প্রতিযোগিতার পক্ষ দলের দলনেতা ও শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক শারমিন সুলতানা নিশি বলেন, বিতর্ক একটি ভালো লাগার জায়গা, ভালোবাসার জায়গা। আর এই ভালোলাগার জায়গায় সফলতা পেলে আনন্দের সীমা থাকে না। আমাদের ছাত্রীহলের ডিবেটিং ক্লাব হলো ভালোবাসার কেন্দ্রস্থল। জয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করার আনন্দ সত্যিই অসাধারণ।
জয়ী দলের বিতার্কিক মুনিয়া আক্তার যুথী বলেন, `এই গৌরব আমাদের ছাত্রীহলের গৌরব, হলের সকল ছাত্রীর গৌরব। আমরা আমাদের সেরাটা দিয়ে বিতর্ক করতে পেরেছি এবং ভাগ্য সহায় ছিল। সর্বোপরি ভিসি ম্যাম, হলের প্রভোস্ট ম্যাম সহ সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
প্রথম রাউন্ডে জয়ী হবার অনুভূতি জানিয়ে `বঙ্গমাতা তার্কিক পরিষদ` দলের বিতার্কিক নাঈমা আক্তার রিতা বলেন, হলটি প্রতিষ্ঠার পর এবারই প্রথমবারের মতো হলের হয়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছি এবং বিজয় নিয়ে ফিরেছি। এই অর্জন আমাদের জন্য আনন্দের। হলের ডিবেটিং ক্লাব আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে। পাশাপাশি সামনের দিনগুলোতে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিজয়ের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে প্রত্যাশা করছি।
বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ডিবেটিং ক্লাবের মডারেটর ড. বুশরা জামান বলেন, `আমাদের জয়ী হওয়ার কীর্তি অর্জন করা সকলের জন্য নিঃসন্দেহে গর্বের। জয়ী হয়ে আমাদের ছাত্রীদের তা করে দেখিয়েছে। তাদের সবাই অভিনন্দন। ভবিষ্যতেও তাদের সফলতা কামনা করছি।
এ জয়ে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার বলেন, ছাত্রীরা আমার সন্তান তুল্য। তাদের সাফল্য আমি গর্বিত। ছাত্রীদের এমন জয়ে আমি অনেক খুশি, তাদেরকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আশা করি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হবে ‘বঙ্গমাতা তার্কিক পরিষদ’ দলটি এবং ভবিষ্যতে হলের ডিবেটিং ক্লাবের অর্জনের ঝুলি আরও সমৃদ্ধ হবে।