চবি প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পাঁচটি আলাদা ঘটনায় ১৮ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৭ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও একজন ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মী।
বুধবার সকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের তথ্য জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির ভার্চুয়াল সভায় মোট ১৮ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উপাচার্য অধ্যাপক শিরিণ আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ১৬ জনকে এক বছর, এক জনকে দেড় বছর ও একজনকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়।
যেসব ঘটনায় যাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে :
গত বছরের ১১ আগস্ট দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হল শাখা ছাত্রলীগের চার নেত্রীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হল শাখা ছাত্রলীগের উপ তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক তাসফিয়া জাসারাতকে দেড় বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
একই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে না যাওয়ায় এক সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। এরা হলেন, লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আরশিল আজিম এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র শোয়েব মোহাম্মদ (আতিক)।
৮ অক্টোবর আলাওল হলের কক্ষ ভাঙচুর ও প্রাধ্যক্ষকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় দুই ছাত্রলীগকর্মীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা হলেন- সমাজতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী হাছান মাহমুদ এবং শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র শহিদুল ইসলাম।
গত ২ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও রাম দা উঁচিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছয় ছাত্রলীগকর্মীকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। তারা হলেন- সংস্কৃত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের অনিক দাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তনয় কান্তি শিকদার, অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ লাবিব সাঈদ, ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের সিফাতুল ইসলাম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের নাহিদুল ইসলাম, একই বর্ষের ইতিহাস বিভাগের মো. মোবারক হোসেন।
সর্বশেষ গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি পরপর দুদিন রাতে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল শাখা ছাত্রলীগের দুটি উপপক্ষ। এতে উভয় পক্ষের ১১ নেতা আহত হন। এ ছাড়া আহত হয়েছিলেন সহকারী প্রক্টর শহিদুল ইসলাম। এ দুইদিনের ঘটনায় ছাত্রলীগের ছয় নেতা কর্মীকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। বহিষ্কার হওয়া নেতা কর্মীরা হলেন- ফাইনান্স বিভাগের স্নাতকোত্তের আমিরুল হক চৌধুরী, ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের ইকরামুল হক ও দর্শন বিভাগের একই বর্ষের নয়ন দেবনাথ। বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের সাখাওয়াত হোসেন, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মাহমুদুল হাসান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মোহাম্মদ ফাহিম।
এছাড়া শাটল ট্রেনে নাশকতার পরিকল্পনা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক সুনাম বিনষ্টের দায়ে আইন বিভাগের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ও ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মী মো. জোবায়ের হোসেনকে দুই বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।