পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগেই বিজিএমইএ-বিকেএমইএ সদস্যভুক্ত দেশের শতভাগ পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।
বুধবার (১০ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান বিজিএমইএ সভাপতি এসএম মান্নান কচি।
তিনি বলেন, অন্যান্য বারের তুলনায় এবারের প্রেক্ষাপট কিছুটা ভিন্ন। পোশাক শিল্প একটি সংকটময় মুহূর্ত পার করছে। গত ৫ বছরে উৎপাদন খরচ বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ, ব্যাংকের সুদ এখন ১৩-১৪ শতাংশে পৌঁছেছে।
জানুয়ারি মাস থেকে মজুরি ৫৬ শতাংশ বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যেটি অনেক কারখানার জন্যই কঠিন হয়ে পড়েছে, কারণ মজুরি বাড়লেও পণ্যের সঠিক দাম মিলছে না। বরং পণ্যের দরপতন হয়েছে ৬-১৮ শতাংশ। এ অবস্থায় কারখানাগুলো শুধুমাত্র টিকে থাকার জন্য মূল্যছাড় দিয়ে অর্ডার একসেপ্ট করতে বাধ্য হচ্ছে।’
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘আর এবারের ঈদে নতুন মজুরি কাঠামো অনুযায়ী বোনাস দিতে হচ্ছে, যেটি অনেক কারখানার জন্য একটি কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করেছে। তবে শত প্রতিকূলতা স্বত্ত্বেও উদ্যোক্তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন ঈদের আগে বেতন-বোনাস পরিশোধ করার জন্য, অনেকে ব্যক্তিগতভাবে ত্যাগ স্বীকারও করেছেন।’
ঈদের আগে শ্রমিকরা যাতে সুষ্ঠুভাবে বেতন-বোনাস পায়, সে লক্ষ্যে সরকারের সঙ্গে মিলে বিজিএমইএ অগ্রিম প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জানিয়ে এসএম মান্নান কচি বলেন, ‘বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, শিল্প পুলিশ, বিজিএমইএ নিজস্ব সূত্রসহ বিভিন্ন সূত্র থেকে স্পর্শকাতর প্রায় ৬০০টি কারখানার তালিকা পেয়েছিলাম। সে অনুযায়ী শতভাগ বেতন-ভাতা নিশ্চিত করার জন্য ঈদের একমাস আগে থেকেই এসব কারখানা মনিটরিং করা শুরু হয়। সমগ্র বাংলাদেশে ৫০ জনের ২২টি টিম কারখানাগুলো মনিটরিং করে। মনিটরিং করার সময় ২৫টি কারখানায় শ্রম সংক্রান্ত কিছু সমস্যা পাওয়া গিয়েছিলো, যা সমাধান করা হয়েছে। ফলশ্রুতিতে শতভাগ কারখানা মার্চ মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধ করেছে। আমাদের জানামতে বেতন বা বোনাস পায়নি, এরকম একজন শ্রমিকও নেই।’
সব কারখানা শ্রমিকদের ছুটি দিয়েছে এবং শ্রমিকরা বেতন ও বোনাস নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন বলেও জানান বিজিএমইএ সভাপতি। তিনি বলেন, এই প্রচেষ্টায় শ্রমিক নেতা ও শ্রমিকরা সহযোগিতা করেছেন।