স্টাফ রিপোর্টার:

রাজধানীর মিরপুর মডেল থানাধীন এলাকা থেকে বিভিন্ন বাহিনীতে চাকুরী দেওয়ার নামে প্রতারণামূলক ভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া সংঘবদ্ধ চক্রের মূলহোতাসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-৪।

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র‍্যাব জানায়, প্রতারণার নতুন নতুন কৌশল ব্যবহার করে তারা সাধারণ জনগণের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব-৪ এর একটি আভিধানিক দল গতকাল (সোমবার) বিকেলে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে।

এসময় বিভিন্ন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সরকারি-বেসরকারি উচ্চ বেতনে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়া সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে।
আসামিরা হলো- মো. সোহেল রানা ওরফে মিলন (৩৭), মো. ময়নুল ইসলাম মিঠু (২৮), মো. হাফিজার রহমান (৪০), মো. ইব্রাহিম (২৩) ও মো. আল আমিন (২৩)।

র‍্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে। তারা প্রতারণামূলক ভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বেকার যুবকদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে, গ্রেপ্তারকালে তাদের কাছে ভুয়া নিয়োগপত্র, ফাঁকা চেকসহ জালিয়াতির কাজে ব্যবহৃত অন্যান্য সামগ্রী পাওয়া যায়।

আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। আসামিরা জালজালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া ও নকল কাগজপত্র, ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি ও হেফাজতে রাখে। পরবর্তীতে উচ্চ বেতনের চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানের অসহায় বেকার যুবকদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের কাছ থেকে নগদ লক্ষ লক্ষ টাকা অগ্রিম গ্রহণ করে ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদান করে।

এই প্রতারক চক্রের রয়েছে কিছু পেইড এজেন্ট যারা বেকার ও শিক্ষিত যুবকদের কাছে নিজেরা চাকরি পেয়ে উপকৃত হয়েছে বলে ভুক্তভোগীদের আস্থা অর্জন করে। উক্ত প্রতারক চক্র কোন বাহিনীর সদস্য না হয়েও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন বাহিনীসহ সরকারি-বেসরকারি চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানের সাধারণ ও নিরীহ লোকজনকে প্রলুব্ধ করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল।

প্রতারিত লোকজন টাকা দেওয়ার পরও চাকরিতে নিয়োগ না পেয়ে প্রতারকদের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তারা টাকা না দিয়ে মারধর সহ বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। এই চক্রের মূলহোতা সোহেল শুধু নিয়োগ প্রতারণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, সে বাহিনীর পোশাক পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ও ভিডিও আপলোড ও শেয়ার করে বিভিন্ন নারীদের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে কুরুচিপূর্ণ ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ভুক্তভোগীদের ব্ল্যাকমেইল করতো।

আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানায় র‍্যাব। ভবিষ্যতে এরূপ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে র‍্যাব-৪ এর অভিযান অব্যাহত থাকবে।