আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জকাণ্ডে অভিযুক্ত রাজধানীর বনানী থানার বরখাস্ত পুলিশ পরিদর্শক সোহেল রানা জামিন পেয়ে পালিয়েছেন।
ভারতের মেখলিগঞ্জ থানায় প্রতি সপ্তাহে সশরীরে থানায় হাজিরা দেওয়ার শর্তে তাকে জামিন দিয়েছিলেন ভারতের আদালত। পরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় ৪২ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন সোহেল রানা।
আজ রবিবার বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্টকে জানিয়েছে দেশটির পুলিশ।এর আগে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে সোহেল রানাকে গ্রেফতার করেছিল ভারতীয় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ তার সাজা ঘোষণা করেন। এরপর থেকে তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলেই ছিলেন। কিন্তু জেলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত বছরের ডিসেম্বর মাসে জামিনের আবেদন করেন সোহেল। পরে মেখলিগঞ্জ থানায় প্রতি সপ্তাহে সশরীরে হাজিরা এবং থানা এলাকার বাইরে যাওয়া যাবে না এমন শর্তে একই বছরের ৮ ডিসেম্বর তার জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
পুলিশ আরও জানায়, জামিন পাওয়ার পর থানায় এসে হাজিরা দেওয়ার পরিবর্তে তিনি একটি ই-মেইলের মাধ্যমে জানান শারীরিক অবস্থার অবনতির জন্য তাকে উন্নত চিকিৎসা নিতে থানা এলাকার বাইরে যেতে হচ্ছে। এ বিষয়ে কোচবিহার জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু কাগজও থানায় ই-মেইল করেন তিনি। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এদিকে, গত বছরের ৭ এপ্রিল ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের পাচার হওয়া অর্থ ফেরত এনে ভুক্তভোগীদের মধ্যে বণ্টন করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। তখন অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেন আদালত। এছাড়া এ বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের জন্য কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েও রুল জারি করা হয়।
এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে ওইদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার এম আব্দুল কাইয়ুম লিটন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
এর আগে গত বছরের ৩ এপ্রিল ৭৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন তারেক আলম নামে এক ব্যক্তিসহ ই-অরেঞ্জের প্রতারণার শিকার ৫৪৭ গ্রাহক। রিটে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাওয়া হয়। গ্রাহকদের পক্ষে ব্যারিস্টার এম আব্দুল কাইয়ুম রিট আবেদনটি দায়ের করেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।