স্বাধীনতার পর থেকে দূর্ভোগে দুই জেলার সীমান্তের বাসিন্দারা
26, May, 2022, 7:16:12:PM
উজ্জ্বল দাশ, ওসমানীনগর (সিলেট) একটি ব্রিজ। ব্রিজের সংযোগে দুই দিকেই রয়েছে বাঁশের সাঁকো। বাঁশের সাঁকো দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে ব্রিজটি পারাপার হন জনসাধরণ। অপরকিল্পিত ভাবে নদীর মধ্যখানে নির্মাণের ফলে এক পাশে হেল পড়েছে ব্রিজটি। যার ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সিলেটের ওসমানীনগর ও হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ১০ গ্রামের বাসিন্দারা।
জানা যায়, ওসমানীনগর উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ কালনিচর-ইসলামপুর পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা। সেই রাস্তা ধরেই ইসলামপুর ও নবীগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর গ্রামের মধ্যেবর্তী স্থান দিয়েই প্রবাহিত কালনি নদী। দুই উপজেলার সিমানা অনেকটাই কালনি নদী ভাগ করে দিয়েছে। তবে, ব্রিজটি দুই উপজেলার জনসাধারণের যোগাযোগর মাধ্যম হিসাবে নির্মিত হলেও ব্রিজটি এখন স্থানীয়দের গলার কাঁটা। ফলে দুই উপজেলার শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ ও রোগীসহ ১৫ সহস্রাধিক স্থানীয় বাসিন্দাসহ দূর্ভোগের মধ্যে চলাচল করছেন।
স্থানীয়রা জানান, বিগত বিএনপি সরকারের আমলে দুই উপজেলার সংযোগ সড়ক কালনি নদীর উপর অপরিকল্পিতভাবে ব্রিজটি নির্মাণ হয়। প্রয়োজনের তুলনায় ছোট ব্রিজটি নির্মাণ ও দুই পাশে মাঠি ভরাট না করায় নদীর মধ্যখানে নির্মিত ব্রিজটি পানির প্রভাবে এক পাশে হেলে পড়ে। দীর্ঘদিন অকেজো অবস্থায় থাকার পর বিকল্প রাস্তা না থাকায় বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে জরাজির্ণ ওই ব্রিজ দিয়ে জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে চলাচল করছেন দুই উপজেলার বাসিন্দারা। ওসমানীনগর উপজেলার দক্ষিন কালনিচর-ইসলামপুর ব্রিজ পর্যন্ত দুই কিলোমিটার রাস্তা পাকা করনের দাবি জানিয়ে ২০১৯ সালের মার্চ মাসে দক্ষিণ কালনিচর গ্রামের হাকীম মাওলানা আনছার আহমদ সিদ্দেকী ও শাহাজান আলী এলাকাবাসির পক্ষে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবরে লিখিত আবেদন করলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। পরবর্তীতে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এর ডিও লেটার সম্মেলিত রাস্তা পাকাকরণ ও কালনি নদীর উপর নতুন সেতু নির্মাণে গ্রামবাসীর পক্ষে হাকীম মাওলানা আনছার আহমদ সিদ্দেকী আবেদন করলেও কাগজ চালাচালিতে তা টেন্ডার প্রক্রিয়ায় আসার পর হয়ে আছে ফাইল বন্দি।
সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, অপরিকল্পিত ভাবে প্রয়োজনের তুলনায় ছোট এই ব্রিজটি নির্মাণ ও দুই পাশে মাঠি ভরাট না করায় নদীর মধ্যখানে নির্মিত সেতুটি পানির প্রভাবে ধীরে ধীরে এক পাশে হেলে পড়ে। ফলে যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেটেও সেতু পারাপার অসম্ভব হয়ে উঠায় ব্রিজের দুই দিকে বাঁশের সাকোঁ দিয়ে চলাচল করছেন স্থানীয়রা।
দক্ষিন কালনিচর গ্রামের হাকীম মাওলানা আনছার আহমদ সিদ্দেকী, মাধবপুর গ্রামের মাষ্টার আব্দুস ছত্তার, দক্ষিণ কালনিচর গ্রামের মাহবুবুল আলম, ইসলাম পুরের মুক্তার মিয়া গালিমপুর গ্রামের আব্দুল কাইয়ুমসহ গ্রামবাসী জানান, ওসমানীনগরের দক্ষিণ কালনিচর, ইসলামপুর, সুরিকোনা, লামাতাজপুর, তাজপুর, নবীগঞ্জ উপজেলার গালিমপুর, মাধবপুর, আটঘর, নোয়াগাওসহ পাশ্ববর্তী প্রায় ১৫গ্রামের বাসিন্দারা স্বাধীনতার পর থেকে দুই কিলোমিটার পাকারাস্তা ও কালনি নদীর উপর একটি সেতুর অভাবে দূর্ভোগের স্বীকার হচ্ছেন। দুই উপজেলার সিমান্তবর্তী হওয়ায় অবহেলিত এই এলাকার উন্নয়নে দায়সারাভাব প্রকাশ করে যাচ্ছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা। গ্রামবাসীর পক্ষে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন কারলেও তা মাপ-যোগের মধ্যে সিমাবদ্ধ রয়েছে। অবহেলিত এলাকার দীর্ঘদিনের দাবি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রক্রিয়াধীন থাকা কালনি নদীর উপর ১৩০ মিটার দৈর্ঘ্যর সেতুটি দ্রুত বাস্তবায়ন ও দক্ষিণ কালনিচর-ইসলামপুর দুই কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণ হলে দুই উপজেলার শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১৫ গ্রামের বাসিন্দারের দূর্ভোগের অবসান হবে।
উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী এস এম আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, দক্ষিণ কালনিচর-ইসলামপুরএলাকার দুই কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণসহ কালনি নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণ স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ব্যাপারে উর্ধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে ব্রিজটি দ্রুত বাস্থবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।