ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বড়খাল গ্রামের বৃক্ষপ্রেমিক ছাদেক আলী নার্সারি করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। প্রতিবছর ১০ লাখ টাকার গাছের চারা বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে তিনি লাভবান হচ্ছেন। নার্সারিতে পাঁচ জন শ্রমিক কাজ করেন। পাশাপাশি ছেলে ও স্ত্রী তাঁকে সহযোগিতা করেন।
বাংলাবাজার ইউনিয়নের বড়খাল গ্রামের শাহাব উদ্দিনের পুত্র ছাদেক আলী। পিতার হাত ধরেই বড়খাল স্কুল ও কলেজ সড়ক সংলগ্ন ৪০ শতক জমি লিজ নিয়ে দীর্ঘ একযুগ ধরে গড়ে তুলেছেন দেশি-বিদেশি গাছের চারা। নাম দিয়েছেন ‘মা-বাবার স্বপ্ন নার্সারি’। এখন বাণিজ্যিকভাবে সফলতাও পাচ্ছেন তিনি। প্রতিবছর নতুন নতুন জাত সংগ্রহ করে এলাকায় বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন।
বেকার যুবক ছাদেক আলী পারিবারিক দৈন্যদশার কারণে লেখাপড়া করতে পারেননি। পিতার হাতধরে তিনি নার্সারিতে এসে খুলে যায় তাঁর ভাগ্যের চাকা।
ছাদেক আলীর নার্সারিতে আম বারি-৪, সূর্যডিম, কাটিমন, সুবর্ণরেখা, আম্রপালিসহ প্রায় ৫০ জাতের দেশি-বিদেশি আমের চারা রয়েছে। এছাড়া চায়না-৩ লিচু, বেদানা লিচু, মুম্বাই লিচু, জাম, আঙ্গুর, ভিয়েতনামি কাঁঠাল, পেয়ারা, রাম্বুটান, সাতকরা, থাই পেয়ারা, লটকন, আমলকি, কদবেল, পেঁপে, সফেদা, ভিয়েতনামি নারিকেল, জামরুল, বেদানা, ডালিম, আপেল, সাদা আপেল, কমলা, নাশপাতি, বেল, চালতা, আমড়া, ড্রাগন ফল, মিষ্টি জলপাই, করমচা, লটকন, চায়না কমলা, কাশ্মীরি কুল, বাউকুলসহ প্রায় শতাধিক দেশি-বিদেশি ফল ও ফুলের চারা রয়েছে। এ ছাড়া বারোমাসী শজনে, এলাচি, দারুচিনি, লবঙ্গ, তেজপাতা, গোলমরিচ, এলোভেরা, শতমূলী, তুলসীসহ বিভিন্ন মসলা, ঔষধি গাছ, কাঠের গাছ, সবজির চারা পাওয়া যায়।
ছাদেক আলী বলেন, পারিবারিকভাবে আমি নার্সারি করে আসছি। এর আয় থেকে চলে আমার পরিবার। বাবার পর আমি ১২ বছর ধরে এখানে নার্সারি করছি। বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়েছি। কিন্তু কখনো পাইনি সরকারি-বেসরকারি কোনো সহযোগিতা। স্থানীয়ভাবে চারা বিক্রিসহ বর্তমানে অনলাইনেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে আমার নার্সারির উন্নত জাতের চারা।
উপজেলা কৃষি অফিসার শেখ মো. মহসিন বলেন, অজপাড়াগাঁয়ে একটি নার্সারিতে এভাবে ফুল, ফলদ, সবজি, ঔষধি চারার ব্যাপক সংগ্রহ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তার নার্সারি থেকে উৎসাহ পেয়ে গাছ লাগানোটা হতে পারে সামাজিক বন্ধন ও সুস্থ বিনোদনের উৎস। তাছাড়া পরিবর্তিত জলবায়ুর বিরূপ প্রতিক্রিয়া থেকে বাঁচতে বৃক্ষ রোপণের বিকল্প নেই।
|