রোকুনুজ্জামান খান, গাজীপুর :

গাজীপুর সদর উপজেলায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের উপর গড়ে উঠেছে অসংখ্য ভ্রাম্যমান খাবারের দোকান। উন্মুক্ত পরিবেশে মহাসড়কের উপর তৈরি করা এই খাবার খেয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে শিশুসহ নানা পেশার মানুষ। দীর্ঘদিন হতে এমন পরিবেশে খাবার বিক্রি হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নেই কোন নজদারি বা অভিযান।

গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘেরবাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক। তার উপর এবং ফুটপাতে খোলা আকাশের নিচে, ভ্রাম্যমাণ দোকান বসিয়ে অপরিচ্ছন্নভাবে নানারকম খাদ্য সামগ্রী বিক্রি করছে।

এসব খাদ্য তালিকার মধ্যে রয়েছে, মাংস, বার্গার, শিক কাবাব, চটপটি হালিম, ফুচকাসহ নানান ধরনের খাবার। এসব খাবার খেয়ে শিশুরাসহ সাধারণ জনগণ পেটের পীড়াসহ নানান রোগে ভুগছেন।

বাঘেরবাজারের আশপাশের হোটেলগুলোতেও এমন চিত্র ফুটে উঠেছে। আর এই সুযোগে বাজার ইজারার নামে প্রতিদিন তাদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে ১শ টাকা করে চাঁদা। যদিও বাজারটিতে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সপ্তাহে তিন দিন স্লিপ দিয়ে ইজারা নেওয়ার কথা।

একাধিক পথচারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে যাতায়াতের মূল সড়ক বাঘেরবাজার বাস স্ট্যান্ড। বাজারটি মহাসড়কের সাথে হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা এখান দিয়ে যাতায়াত করেন। আর তার সুবাদে মহাসড়ক, ফুটপাত ও ফ্লাইওভারের উপর বসে অসংখ্য ভ্রাম্যমান খাবার দোকান। আর এসব দোকানিরা মহাসড়কের ধুলাবালির মাঝেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরী করছে ভাজাপোড়া খাবার। খোলা অবস্থায় বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন বাহারি খাবার। এসব লোভনীয় খাবার দেখে আকৃষ্ট হয়ে পড়ছে শিশুসহ বড়রাও। রাস্তার পাশে ধুলাবালির এসব খাবার খেলে হতে পারে বিভিন্ন রোগ বালাই, এমন কি হতে পারে ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি রোগ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, শখের বয়সে একদিন ভাজাপোড়া খেয়েছিলাম তারপর আমার পেট খারাপ করেছিল, আমি ৩দিন বিছানায় শুয়েছিলাম। এখন থেকে এসব ধারে কাছে আর যাই না।

এসব খাবারের মান সম্পর্কে জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা বলেন, অনেকদিন হতে ব্যবসা করে আসছি খাবারের পরিবেশ নিয়ে কেউ কোনদিন কথা বলেনি। তবে তিনি খাবারের মান ভাল বলে দাবি করেন। খাবার ঢেকে না রাখা এবং মহাসড়কের ধুলাবালি খাবারের উপর পরছে, এমন প্রশ্নের কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের গাজীপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো: দিদার হোসেন জানান, মাহাসড়কের পাশে ধুলাবালির মাঝে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বানানো ও বিক্রি করা ভাজাপোড়া খেলে নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এসব খাবার দীর্ঘমেয়াদি খেলে এমন কি ক্যান্সার ও হতে পারে। বাঘের বাজারসহ আশপাশ এলাকায় যারা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত অভিযানের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।