পুরুষ হকি জুনিয়র এশিয়া কাপের উদ্বোধনী দিনে স্বাগতিক ওমানের বিপক্ষে মঙ্গলবার মাঠে নামবে বাংলাদেশ। সালালাহ স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায়। ওমানের বিপক্ষে জয়ের ব্যাপারে দারুণ আত্মপ্রত্যয়ী বাংলাদেশের কোচ মামুন উর রশিদ এবং অধিনায়ক প্রিন্স লাল সামন্ত। সোমবার অনুশীলন শেষে এমন কথাই জানান তারা।
এশিয়া কাপ হকি সামনে রেখে প্রায় ৩ মাসের দীর্ঘ অনুশীলন ক্যাম্প করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ভারতেই প্রায় ২০ দিনের অনুশীলন ক্যাম্পের পাশাপাশি হরিয়ানাতে ১০টি প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ খেলেছেন মামুন উর রশিদের শিষ্যরা। হকির ইতিহাসে দেশের বাইরে এত বড় ক্যাম্প-অনুশীলন ম্যাচের সুবিধা এর আগে পাইনি বাংলাদেশ। বলতে গেলে পুরো প্রস্তুত হয়েই ওমানে পা রেখেছেন প্রিন্স, রকি, আমিরুল, জাহিদ, আবেদরা।
ওমান ম্যাচ সামনে রেখে কোচ মামুন উর রশিদ বলেন, ‘১৯ তারিখ (মে) আমরা সালালাহ শহরে এসেছি। ওইদিন থেকে আজ নিয়ে তিনদিন টানা অনুশীলন করলাম। মাঠটা স্লো। অনেক পুরাতন মাঠ। এখানে আগে খেলা হয়নি। কারণ এখনকার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ছিল না। এশিয়া কাপ সামনে রেখে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঘাসগুলো অনেক বড়। বল টানলে স্লো আসে। পুল করলে অনেক বেশি স্টেন্থ দিতে হয়। এটা একটা সমস্যা। ওমানের বিপক্ষে আমরা জয়ের জন্য মাঠে নামব। জয় দিয়েই আমরা টুর্নামেন্ট শুরু করতে চাই।’
হকিতে বাংলাদেশ-ওমান দ্বৈরথ বেশ পুরনো। দু’দলের লড়াইটাও হয় জমজমাট, তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ। হোক সেটা সিনিয়র দল কিংবা জুনিয়র। আগামীকাল যে দলটা ওমানের মোকাবিলা করবে এই দলটাই চার মাস আগে হিসাব কষে বললে ১৩১ দিন আগে ওমানের মাটিতেই মেনস জুনিয়র এএইচ কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল। পেনাল্টি শুট আউটে ৭-৬ (১-১) গোলের ব্যবধানে ওমানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সেই সুখস্মৃতি এখনো উজ্জ্বল মামুন উর রশিদের স্মৃতিতে। তারপরও সাবধানী কোচ মামুন উর রশিদ জানান, ‘ওমানের বিপক্ষে সবশেষ ফাইনাল ম্যাচটি নিয়ে আমরা অনেক অ্যানালাইসিস করেছি। ওমানের শক্তিশালী এবং দুর্বল দিক খোঁজার পাশাপাশি নিজেদের শক্তি এবং দুর্বল জায়গাগুলো চিহ্নিত করেছি। সেই অনুযায়ী কাজ করেছি। আমরা আমাদের নরমাল খেলাটাই খেলব। মাঠের সমস্যা না হলে আমরা ইনশাল্লাহ জয়ী হবো।’
মাঠ নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা বললেও নিজেদের ফেবারিটই মানছেন মামুন উর রশিদ। কোচের সুরে সুর মিলিয়েছেন অধিনায়ক মিডফিল্ডার প্রিন্স লাল সামন্তও। ওমান ম্যাচ সামনে রেখে প্রিন্স বলেন, ‘আমরা বেশ ভালো প্রস্তুতি নিয়েছি। দলে কোনো ইনজুরি সমস্যা নেই। সবাই মাঠে নামার জন্য প্রস্তুত আছে। ওমানে আমাদের প্রস্তুতিটাও ভালো হয়েছে। নিজেদের খেলাটা খেলতে পারলে অবশ্যই আমরা জিতব। ওমানের বিপক্ষে আমাদের জয়ের রেকর্ডটা খারাপ না।’ একই সঙ্গে প্রিন্স এটাও জানান যে স্কিল, টেকনিকসহ সব দিক থেকে তারা ওমানের চেয়ে অনেক ভালো দল।
১০ জাতির জুনিয়র এশিয়া কাপ হকিতে এবার ‘বি’-গ্রুপ থেকে লড়বে বাংলাদেশ। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক ওমান, উজবেকিস্তান, মালয়েশিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়া। আর গ্রুপ ‘এ’-তে পড়েছে ভারত, পাকিস্তান, জাপান, থাইল্যান্ড এবং চাইনিজ তাইপে। এই টুর্নামেন্টের সেরা ৪ দল যুব বিশ্বকাপে খেলার টিকিট পাবে। সেই বিশ্বকাপকেই এবার পাখির চোখ করছে বাংলাদেশ।
জুনিয়র এশিয়া কাপ হকির এটি ১০ম আসর। সেই ১৯৮৮ সালে করাচি (পাকিস্তান) থেকে শুরু হয় এই টুর্নামেন্ট। মাঝে কেবল করোনার কারণে একটি আসর হয়নি। যেটি ২০২১ সালে (নবম আসর) ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সেই হিসাবে ৮ বছর পর মাঠে গড়াতে যাচ্ছে মেনস হকি জুনিয়র এশিয়া কাপ। ২০১৫ সালে মালয়েশিয়ার কুয়ানতানে সবশেষ অনুষ্ঠিত হয়েছিল আসরটি।