আশুলিয়ায় অপহরণের ১০ দিন পর যুবকের লাশ উদ্ধার, গ্রেফতার ২
18, May, 2023, 5:08:7:PM
মোহাম্মদ ইয়াসিন :
ঢাকার আশুলিয়ায় যুবককে অপহরণের ১০ দিনপর বস্তাবন্ধি লাশ উদ্ধার করেছে র্যাব ৪ সিপিসি-২ এর আভিযানিক দল।এ সময় অপহরনের মূলহোতা সহ ২ জন আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র্যাব।
বৃহস্পতিবার (১৮মে) আসামীদের সীকারক্তি মোতাবেক আশুলিয়ার শ্রীপুর এলাকার একটি পুকুর থেকে বস্তাবন্ধি হৃদয়(২০)এর লাশ উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, গত ০৮ মে ২০২৩ তারিখ বিকালে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন জামগড়া এলাকা হতে ভিকটিম মোঃ হৃদয় (২০) প্রতিদিনের মতো বাসা থেকে বের হয় পরবর্তীতে দীর্ঘসময় অতিবাহিত হওয়ার পরও ভিকটিম হৃদয় বাসায় ফেরত না আসায় তার পরিবারের লোকজন আশেপাশে ও আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় খোঁজাখুঁজির পরেও কোনো সন্ধান পায়নি,এমন সময় ঘটনার দিন অজ্ঞাত পরিচয়ে ফোনের মাধ্যমে ভিকটিমকে অপহরণ এবং জীবিত ফেরত পাবার শর্তে ৫০,০০,০০০/-(পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসামীরা, অন্যথায় ভিকটিমকে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। এপ্রেক্ষিতে ভিকটিমের পিতা নিরুপায় হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন এবং র্যাব-৪ বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করলে র্যাব উক্ত ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে যার প্রেক্ষিতে ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অপহৃত ভিকটিম উদ্ধার ও আসামী গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন এলাকায় সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে অপহৃত ভিকটিম এর লাশ উদ্ধারপূর্বক উক্ত অপহরণ ও হত্যার সাথে জড়িত ঘটনার মুলহোতা ময়েজ হোসেন ওরফে পরান(২২) ও সহযোগী মোঃ সুমন মিয়া ওরফে বাপ্পি (২৩)’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। আসামী ময়েজ হোসেন ওরফে পরান (২২), মানিকগঞ্জ জেলা ও মোঃ সুমন মিয়া ওরফে বাপ্পি (২৩), বগুড়া জেলার বাসিন্দা, আসামীদ্বয় আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতো।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয় তাদের কৃত অপরাধের কথা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত আসামী ও ঘটনার মূলহোতা ময়েজ হোসেন ওরফে পরান জানায় যে, ভিকটিম হৃদয় ও আসামী পরান একই এলাকার বাসিন্দা এবং পূর্ব পরিচিত হওয়ায় তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিলো। ভিকটিম হৃদয়ের বাবা স্থানীয় প্রভাবশালী ও আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ব্যাক্তি। গ্রেফতারকৃত আসামী ময়েজ হোসেন ওরফে পরান ও তার সহযোগী গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ সুমন মিয়া ওরফে বাপ্পি, অপরাপর দুই জন পলাতক আসামী আকাশ এবং শাহীন আর্থিক সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ধরে ভিকটিম হৃদয়’কে অপহরণ করে তার পরিবারের নিকট হতে মোটা অংকের টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করে আসছিলো। পূর্ব পরিকল্পনামতে গত ০৮ মে ২০২৩ তারিখ বিকেলে আসামীরা ভিকটিমকে আড্ডা দেয়ার কথা বলে সুকৌশলে পলাতক আসামী আকাশের বাসায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আসামীরা ভিকটিম’কে জোড়পূর্বক রশি দিয়ে বেঁধে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন হতে তার বাবার মোবাইলে ফোন করে মুক্তিপণ বাবদ ৫০,০০,০০০/-(পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা দাবী করে। গ্রেফতারকৃত আসামী ময়েজ হোসেন ওরফে পরান’কে জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও মুক্তিপনের টাকা না পেয়ে আসামীরা সংঘবদ্ধভাবে ভিকটিমের গলায় রশি পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং পরবর্তীতে ভিকটিমের মুখে বালিশ চাপা দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। অতঃপর সন্ধায় ভিকটিমের লাশ বস্তা বন্দি করে সুকৌশলে ঘটনাস্থল হতে রিকসাযোগে শ্রীপুর এলাকাধীন একটি পরিত্যক্ত ডোবায় ফেলে দেয়। অতঃপর আসামীরা আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে এলাকা ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যায়।
তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা প্রক্রীয়াধীন এবং পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।