ঢাকা জেলার সাভার,আশুলিয়া ও ধামরাইয়ের বিভিন্ন মহাসড়ক ও মহল্লায় হিজড়া সম্প্রদায়ের চাঁদাবাজী লক্ষনীয়।বহুল জনগোষ্টীর বসবাস স্থল হওয়ায় সাভার ও আশুলিয়ার উল্লেখযোগ্য সাভার নামাবাজার,নবীনগর,পল্লিবিদুৎ,পলাশবাড়ী ও বাইপাইল নামক স্থানে এই তৃতীয় লিঙ্গ তথা হিজড়া জনগোষ্টীর বসবাস ও বিস্তার রয়েছে। হিজড়া সম্প্রদায় বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্র অংশ।
এ লক্ষ্যে এ জনগোষ্ঠীর মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ, তাদের জন্য সামাজিক ন্যায় বিচার নিশ্চিতকরণ, তাদের পারিবারিক, আর্থসামাজিক, শিক্ষা ব্যবস্থা, বাসস্থান, জীবনমান উন্নয়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সর্বোপরি তাদেরকে সমাজের মূল স্রোতধারায় এনে দেশের সার্বিক উন্নয়নে তাদের সম্পৃক্তকরণের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতায় ২০১২-১৩ অর্থবছরে ‘হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি’ বাস্তবায়ন শুরু হয়। পরবর্তীতে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ২১ টি জেলায় তা সম্প্রসারণ করা হয়। ২০১৫-১৬ অর্থবছর হতে ৬৪টি জেলায় হিজড়া জনগোষ্ঠীর ভাতা, শিক্ষা উপবৃত্তি এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে।
প্রতিবছরই এ কার্যক্রমের আওতায় উপকারভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমাজসেবা অধিদফতরের প্রাথমিক জরিপ মতে বাংলাদেশে হিজড়ার সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার। ২০১৪ সালে ২২ জানুয়ারী বাংলাদেশ সরকার হিজড়া জনগোষ্ঠীকে ‘হিজড়া লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে। ২০২১-২২ অর্থবছর হতে এ কর্মসূচির ভাতা ও শিক্ষা উপবৃত্তির নগদ সহায়তায় জিটুপি পদ্ধতিতে উপকারভোগীর মোবাইল হিসাবে প্রেরণ করা হচ্ছে।
সরকারি সহায়তা ব্যাতিত বিভিন্ন এনজিও ও বিদেশি সংস্থা এদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু এর মাঝেও অভিনব কায়দায় মাদক সেবন ও চাঁদাবাজীর মতো অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। এছাড়া ভ্রাম্যমান যৌনব্যাবসা সহ সামাজিক অনিয়মেও যুক্ত হচ্ছে এ সম্প্রদায়ের কিছু সদস্য। সড়ক, মহাসড়ক কিংবা হাট-বাজার থেকে বাসা বাড়ি পর্যন্ত বিস্তৃত এই সম্প্রদায়ের দৌরাত্ম। তাদের নবআবিষ্কৃত কায়দা হচ্ছে বিয়ে বাড়ি কিংবা গুরুত্বপূর্ণ কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান। যেখানেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেখানেই হাজির হয়ে অপ্রীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করছে।
সরেজমিনে দেখা যায় সাভারের মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে দাড়িয়ে সিএনজি, প্রাইভেট কারসহ প্রায় সকল পরিবহন ও যাত্রীবাহি বাসে হিজড়ারা সংঘবদ্ধ হয়ে চাঁদাবাজী করছে।
এছাড়াও নবজাতক শিশুকে জিম্মি করেও হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। এসকল ঘটনায় দিশেহারা সাধারণ জনগন। তাদের দাবীকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পরতে হয় বিরম্বনায়,কখনো কখনো হামলার শীকার হতে হয়। এলাকায় বিয়ে বাড়ি কিংবা কমিউনিটি সেন্টার গুলিতে হিজরাদের চাঁদাবাজী হরহামেশাই হয়।তাদের দাবীকৃত চাঁদা সর্বনিম্ন হাজার টাকা,এর হাড় কখনো কখনো ৫ থেকে দশ হাজারেও উঠে।
অনেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করেও কোন সুরাহা না পেয়ে প্রতিবাদ করার সাহস হারিয়ে ফেলেছে। তাই এদের দ্রুত পুনর্বাসনসহ নির্দিষ্টভাবে কাজের ব্যবস্থা করার দাবী জানান সচেতন মহল।