জীবনে সেটাই ঘটবে যা মহান আল্লাহতাআলা আমাদের ভাগ্যে নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তাই পেরেশান হওয়ার কিছু নেই। আল্লাহর ফয়সালার উপর সন্তুষ্ট থাকা চাই। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি বল, আল্লাহ আমাদের ভাগ্যে যা লিখে রেখেছেন, তা ব্যতীত কিছুই আমাদের নিকট পৌঁছবে না। তিনিই আমাদের অভিভাবক।’ (সুরা তওবা-৫১)।
তবে বেশি বেশি করে দোয়া করবেন। কারণ দোয়া অনেক পাওয়ারফুল আমল। আল্লাহতাআলা আম্বিয়ায়ে কেরামের আমলের মধ্যে দোয়ার বিষয়টি পবিত্র কোরআনে বারবার উল্লেখ করেছেন। হাদিসে এসেছে- ভাগ্য পরিবর্তন হয় না দোয়া ব্যতীত। (তিরমিযী-২১৩৯)।
অতিদ্রুত হালাল, উত্তম ও সম্মানজনক রুজি এবং উত্তম ও দ্বীনদার স্ত্রী কিংবা স্বামী পাওয়ার জন্য বেশি বেশি করে মুসা আলাইহিস সালাম কৃত দোয়াটি পড়তে পারেন- হে আমার পালনকর্তা, তুমি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ নাজিল করবে, আমি তার মুখাপেক্ষী। (সুরা কাসাস-২৪)।
কল্যাণময় বিয়ের জন্য দ্বীনদার নারীর বিকল্প নেই। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্বীনদার নারীকে বিয়ের জন্য অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তাই উপযুক্ত ছেলে-মেয়েদের দ্রুত কল্যাণময় বিয়ের জন্য এ আমলগুলো করা যেতে পারে-
১. ইসতেগফার
যথাসম্ভব সবসময় বেশি বেশি ইস্তেগফার করা। উঠতে বসতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে থাকা। এ ইসতেগফারেগুলো পড়া-
> أَستَغْفِرُ اللهَ
উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহ।’
অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
নিয়ম : প্রতি ওয়াক্ত ফরজ নামাজের সালাম ফেরানোর পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ইসতেগফারটি ৩ বার পড়তেন।` (মিশকাত)
> أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।‘
অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর দিকেই ফিরে আসছি।
নিয়ম : এ ইসতেগফারটি প্রতিদিন ৭০/১০০ বার পড়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতিদিন ৭০ বারের অধিক তাওবাহ ও ইসতেগফার করতেন।` (বুখারি)
অর্থ : `আমি ওই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো মাবুদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তার কাছেই (তাওবাহ করে) ফিরে আসি।`
নিয়ম : দিনের যে কোনো ইবাদত-বন্দেগি তথা ক্ষমা প্রার্থনার সময় এভাবে তাওবাহ-ইসতেগফার করা। হাদিসে এসেছে- এভাবে তাওবাহ-ইসতেগফার করলে আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেবেন, যদিও সে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়নকারী হয়।` (আবু দাউদ, তিরমিজি, মিশকাত)
অর্থ : `হে আল্লাহ! তুমিই আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই বান্দা আমি যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নেয়ামত দিয়েছ তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গোনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। কারন তুমি ছাড়া কেউ গোনাহ ক্ষমা করতে পারবে না।`
নিয়ম : সকালে ও সন্ধ্যায় এ ইসতেগফার করা। ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর এ ইসতেগফার পড়তে ভুল না করা। কেননা হাদিসে এসেছে- যে ব্যক্তি এ ইসতেগফার সকালে পড়ে আর সন্ধ্যার আগে মারা যায় কিংবা সন্ধ্যায় পড়ে সকাল হওয়ার আগে মারা যায়, তবে সে জান্নাতে যাবে।` (বুখারি)
২. ফরজ নামাজের পর দোয়া
প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর কোরআনের একটি আয়াত পড়া। এটি একটি দোয়া। সম্ভব হলে দোয়াটি গভীর আবেগ নিয়ে সব সময় পড়তে থাকা। তাহলো-
অর্থ : ‘হে আমাদের প্রভু! আপনি আমাদেরকে এমন স্ত্রী ও সন্তানাদি দান করুন যারা আমাদের চক্ষু শীতল করবে। আর আপনি আমাদেরকে মুত্তাকিদের নেতা বানিয়ে দিন।’ (সুরা ফুরকান : আয়াত ৭৪)
৩. যথা সময় ও স্থানে দোয়া করা
দোয়া কবুলের সময় ও স্থানগুলোতে বেশি বেশি দোয়া করা। যেসব সময়ে দোয়া কবুল হয় এবং যেসব স্থানে দোয়া কবুল হয়; এর একটি সময় ও স্থানও যেন দোয়া থেকে বাদ না যায়।
৪. হালাল পন্থায় পাত্র/পাত্রী খোঁজা
আমল ও দোয়ার পাশাপাশি হালাল পন্থায় কাঙ্ক্ষিত পাত্র/পাত্রী খোঁজ করাও জরুরি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর উপযুক্ত ছেলে-মেয়েদের দ্রুত বিয়ের জন্য উল্লেখিত আমলগুলো যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।