ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগে সদস্যদের সংবাদ সম্মেলন
15, February, 2023, 10:48:9:PM
হালিমা খানম:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল মামুন সরকারের নানা অনিয়মের বিষয়ে জানাতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন পরিষদের ৬ সদস্য। বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) বেলা ৩টার দিকে জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে তারা অনিয়মের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। এসময় তারা জানান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল মামুন সরকারের বিভিন্ন অনিয়ম ও সেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে জেলা পরিষদের ১২ সদস্যের মধ্যে ৮ সদস্য গত ৯ ফেব্রুয়ারী স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং সচিব বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগকারী জেলা পরিষদের সদস্যরা হলেন, আখাউড়ার সাইফুল ইসলাম, সরাইলের পায়েল হোসেন মৃধা, নাসিরনগরের সামসুল কিবরিয়া, আশুগঞ্জের বিল্লাল মিয়া, বাঞ্ছারামপুরের আবুল কালাম আজাদ, বিজয়নগরের বাবুল আক্তার, সদর উপজেলার বাবুল মিয়া ও সংরক্ষিত সদস্য বিউটি কানিজ। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগকারিদের মধ্যে বাবুল আক্তার ও বাঞ্ছারামপুরের আবুল কালাম আজাদ ছাড়া বাকি ৬জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
এসময় জেলা পরিষদের ২নং ওয়ার্ড সদস্য পায়েল হোসেন মৃধা বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম সভাতেই জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার সেচ্চাচারিতা শুরু করেন৷ তিনি এককভাবে তার পছন্দের তিনজন সদস্যকে প্যানেল চেয়ারম্যান বানাতে চেয়েছেন। অথচ আইন অনুযায়ী সকল সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত করতে হয়। নির্বাচিত সদস্যদের পাশ কাটিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র এবং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের অনুকূলে অর্থ বরাদ্দ প্রদানের প্রস্তাব করেছেন।
জেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন, ২০২২ অনুযায়ী জেলা পরিষদের উন্নয়ন কার্যক্রমের সাথে উপজেলা পরিষদ/পৌরসভা সমূহের উন্নয়ন কার্যক্রমের সুষ্ঠু সমন্বয় নিশ্চিত করার জন্য উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়রগনকে পদাধিকার বলে জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা পরিষদের রাজস্ব ও এডিপি বরাদ্দ অনুযায়ী তাদের অনুকূলে বিভাজন করার কোন বিধান রাখা হয়নি। অথচ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার তার নিজ ক্ষমতাবলে সকল উপজেলা চেয়ারম্যানকে ৪ লক্ষ টাকা, পৌরসভার মেয়রদের ৪ লক্ষ টাকা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ৩ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দের বিভাজন করেছেন। যা স্থানীয় সরকার বিভাগের অনুমোদিত রাজস্ব তহবিল ব্যবহার নীতিমালা, ২০২২ এবং এডিপি বরাদ্দের ব্যবহার নীতিমালা, ২০২২ এর পরিপন্থী।
৪নং ওয়ার্ড সদস্য বাবুল মিয়া বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা চেয়ারম্যান উন্নয়ন প্রকল্পের চাহিদা প্রদানের একটি ফর্ম ছাপিয়ে বন্টন করেছেন। উক্ত ছকে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য/চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান এর সুপারিশ গ্রহনের বাধ্যবাধকতা উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি আইন সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করেছেন।
সংরক্ষিত ১.২ ও ৩নং ওয়ার্ড সদস্য বিউটি কানিজ বলেন, সম্পতি ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স্থানীয় সরকার বিভাগের অনুমোদন গ্রহন না করে প্রায় ৩ হাজার শীতবস্ত্র (কম্বল) ক্রয় করেছেন, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ০৯/১০ লক্ষ টাকা। এ বিষয়ে জেলা পরিষদের সভায়ও কোন অনুমোদন গ্রহন করা হয়নি। উনার অনিয়মের কথা জানিয়ে আমরা মন্ত্রণালয়ের লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার বলেন, আমি নিয়ম-নীতির বাহিরে কোনো কাজ করিনি। অভিযোগ যে কেউ করতে পারে, আমি এসবের সাথে জড়িত নয়।