জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ক্যাফেটেরিয়ায় খাওয়ার বিল চাওয়ায় ক্যান্টিনের এক কর্মীকে রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা। অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম সাজবুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস.এম আকতার হোসাইন এর অনুসারী। বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় এঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অভিযুক্ত সাজবুল ইসলাম ক্যান্টিনে ফ্রি তে দুই প্লেট খাবার খাওয়ার পর আরও দুই প্লেট খাবার পার্সেল দিতে বলেন। পরে ক্যান্টিনের কর্মী তুষার তাকে বিলের কথা বললে সাজবুল শাখা ছাত্রলীগের আরেক নেতা মিরাজ হোসেন বিল দিবে বলে জানায়। তুষার মিরাজকে ফোন দিয়ে জানানোর কথা বললে ছাত্রলীগ নেতা সাজবুল ক্যান্টিনের রান্নাঘরে ঢুকে লোহার বড় চামচ দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, মারধরের সময় ক্যান্টিনের পরিচালক মাসুদসহ আরও কয়েকজন ছাড়াতে এগিয়ে গেলে তাদেরকেও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে আবারও মারধর করেন সেই ছাত্রলীগের নেতা।
মারধরের ঘটনায় ক্যান্টিন কর্মী তুষারের মাথায় ও হাতের বাহুতে জখম হয় এবং পিঠসহ পুরো শরীর ফুলে যায়। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আহত ক্যান্টিন কর্মী তুষার বলেন, আমার কাছে খাবার চাইলে আমি বিলের কথা বলি। তখন সাজবুল আমাকে মিরাজ ভাই বিল দিবে বলে জানায়। আমি শুধু বলেছিলাম মিরাজ ভাইকে একটু ফোন দিয়ে জানান। তখনই সে রান্নাঘরের ভিতরে ঢুকে বাবুর্চির ব্যবহৃত লোহার চামচ দিয়ে আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সাজবুল ইসলাম বলেন, আমি এমন কোনো ঘটনার সাথে জড়িত না। এবিষয়ে কিছু জানিনা।
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস.এম আকতার হোসাইন বলেন, কোনো ব্যক্তির দায়ভার সংগঠন নিবেনা।
অভিযুক্ত সাজবুল ছাত্রলীগের বিভাগ কমিটির পোস্টেড নেতা জানালে তিনি বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবিষয়ে ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্তের বিভাগের চেয়ারম্যানকে আমরা জানিয়েছি। বিভাগ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে সাজবুল ইসলামকে রাষ্ট্রপতির ছেলের গাড়িচালকে মারধরের ঘটনায় করা মামলায় পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে এজহারভুক্ত অন্যতম পলাতক আসামী হিসেবে হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ও ক্যাম্পাসে তুচ্ছ ঘটনায় সিনিয়রদের মারধরের অভিযোগও রয়েছে।