মামুনুল হকের মুক্তিসহ ৪ দফা দাবিতে ৭ ফেব্রুয়ারি সমাবেশ
17, January, 2023, 5:24:50:PM
স্বাধীন বাংলা ডেস্ক: হেফাজত ইসলামের নেতা ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হকের মুক্তিসহ ৪ দফা দাবীতে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সমাবেশ করবে তার দল।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির ইসমাঈল নূরপুরী সমাবেশের ঘোষণা দেন।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের আমীর আল্লামা ইসমাঈল নূরপুরী বলেছেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের উদ্যোগে সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হকসহ কারাবন্দী আলেম উলামাদের মুক্তি, জাতীয় পাঠ্যক্রমে ইসলামী শিক্ষা সংকোচনের প্রতিবাদ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, শিক্ষার সকল স্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করণের দাবীতে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু বইমেলা হওয়ার কারণে ডিএমপি কমিশনারের পরামর্শে আমরা গুলিস্তান পার্কে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তার আগে-পরে অনেক আলেম ও মাদ্রাসার ছাত্রদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের অনেকেই এরইমধ্যে মুক্তি পেয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হককে ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল অন্যায়ভাবে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেপ্তার করে। মামুনুল হকসহ কয়েকজন নেতা দীর্ঘ ২১ মাস ধরে কারাগারে বন্দী রয়েছেন।
আমীর আল্লামা ইসমাঈল নূরপুরী বলেন, মাওলানা মামুনুল হক শুধু একজন রাজনীতিবিদই নন তিনি হাদিসের শিক্ষকতাসহ দ্বীনের বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত ছিলেন। তার গ্রেপ্তারে অসংখ্য ছাত্র হাদিসের দরস থেকে বঞ্চিত হয়েছে। পরিবারও তার অনুপস্থিতির কারণে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারের পর তার নামে অন্যায়ভাবে ২৮টি নতুন মামলা দেওয়া হয়েছে। আগের মামলাসহ মোট ৪১ টি মামলা তাকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে। যার প্রত্যেকটিই ভিত্তিহীন ও সাজানো। তার মামলা সম্পূর্ণ জামিনযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও জামিন পাওয়া যাচ্ছে না। একজন দাগী আসামির মতো হাতে হ্যান্ডকাপ, মাথায় হেলমেট ও গায়ে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে আদালতে আনা-নেওয়া করা হয়। যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এতে তিনি শারীরিকভাবে ও মানসিকভাবে কষ্ট পাচ্ছেন। এটা সম্পূর্ণ জুলুম ও অন্যায়। এটা ন্যায় বিচারের পরিপন্থী। সরকারের এহেন আচরণে আমরা ক্ষুব্ধ ও লজ্জিত।
ইসমাঈল নূরপুরী বলেন, গত ১৭ ডিসেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেশের শীর্ষ আলেমদের একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করে কারাবন্দী ওলামায়ে কেরামের মুক্তির দাবি জানান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও তাদের দ্রুত মুক্তির আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, এখনও মাওলানা মামুনুল হকসহ শীর্ষ আলেমদের মুক্তির বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। অনতিলম্বে আমাদের দাবিগুলোর ব্যাপারে সরকার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিশেষভাবে আমাদের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের মুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় ৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সমাবেশ থেকে আন্দোলনের কর্মসূচি দিতে আমরা বাধ্য হবো।
তিনি আরও বলেন, মাওলানা মামুনুল হকসহ কারাবন্দী উলামায়ে কেরামের মুক্তির দাবীতে মাত্র ১৫ দিনে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়েছে, যাতে লক্ষাধিক মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত স্বাক্ষর করেছে। এটি সাধারণ মানুষের কাছে তার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ। তাই আমরা মনে করি তাকে আটকিয়ে রাখার মধ্য দিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলটির সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, যুগ্মমহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মুফতি শরাফত হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশীদ ভূঁইয়া প্রমুখ।