অধিকাংশ অভিজাত শপিংমল ও মার্কেটগুলো বন্ধ হয়ে নিস্তব্ধ রাত সুনসান নীরবতা। দিনের ব্যস্ততম সড়কটিতেও সীমিত হয়েছে যান চলাচল। কেবল সড়কের ওপর সারিবদ্ধ ভ্যানে সাজানো হরেক রকম পণ্য। ক্রেতাদের অপেক্ষায় একদল বিক্রেতা। শাক-সবজির ও কাঁচা বাজার শুরুই হয় রাত নয়টার পর, চলে রাত দেড়টা-দুইটা পর্যন্ত। মূলত কিছুটা কম দামে আর টাটকা সবজির আশাতেই মানুষ মধ্যরাতে আসেন এখানে। রংপুর নগরীর সুপার মার্কেটের সামনে প্রতিদিন বসে এই বাজার।
ভাঙ্গা মসজিদ থেকে শুরু করে মিঠুর মোড় পর্যন্ত শতাধিক ভ্যানে হরেক রকম সবজির পসরা সাজিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা।
বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বাজারে কেনাকাটা করতে আসা প্রায় সবাই আশপাশের বিভিন্ন মহল্লার বাসিন্দা। কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে কেনাকাটা করেন তারা। আবার কেউ কেউ সবজি কিনতেই মধ্য রাতে বাড়ি থেকে আসেন এই বাজারে।
এ বাজারের নিয়মিত ক্রেতা নবাবগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী লোকনাথ বনিক দৈনিক স্বাধীন বাংলার প্রতিবেদককে জানান, বাড়ি ফেরার পথে তিনি সুপার মার্কেটের সামনে এসে প্রায় প্রতিদিনই সবজি কেনেন। এখানে অন্য বাজারের চাইতে গড়ে পাঁচ থেকে দশ টাকা কম মূল্যে টাটকা সবজি পাওয়া যায়।
শহরের পালপাড়া এলাকার বাসিন্দা মাধব মল্লিক দৈনিক স্বাধীন বাংলার প্রতিবেদককে জানান, হাড়িপট্টি রোডে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার পথে তিনি এই বাজার থেকে সবজি কেনেন।
মাধব মল্লিক আরও বলেন, রাতের এ বাজারে কোনো ঝামেলা নেই। বেশি দরদাম করতে হয় না। সবজিও টাটকা পাওয়া যায়।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন পেশার মানুষ এখান থেকে সবজি কিনছেন। অনেকেই সড়কের পাশে বাজার দেখে যাত্রা থামিয়ে কেনাকাটা করছেন।
বিক্রেতারা জানান, রংপুর শহরের আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে চাষিদের উৎপাদিত সবজি তারা সংগ্রহ করে এনে এ বাজারে বিক্রি করেন। পাশাপাশি নগরের সিটি বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও তারা সবজি কিনে এখানে বিক্রি করেন।
প্রায় এক বছর ধরে এ বাজারে সবজি বিক্রি করছেন কুকরুল এলাকার সাজ্জাদুল ইসলাম। তিনি বলেন, দিনে সিটি মার্কেটের পাইকারি বাজার থেকে সবজি কিনে শহরের বিভিন্ন পাড়ায় ভ্যান চালিয়ে বিক্রি করেন। রাত নয়টা বাজলেই চলে আসেন সুপার মার্কেটের সামনে। রাত দেড়টা-দুইটা পর্যন্ত চলে বিক্রি।
রংপুর সদর উপজেলার সদ্যপুস্করিনী ইউনিয়নের পালিচড়া গ্রামের মঞ্জুরুল ইসলাম স্বাধীন বাংলার প্রতিবেদককে বলেন, সিটি বাজারে ব্যবসা করার মতো পুঁজি নেই। তাই স্বল্প পুঁজিতে এভাবে ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করে সংসার চালাতে হয়। এখানে দোকান ভাড়া লাগে না। কোনো জামানত দিতে হয় না।