হাবিবুর রহমান হবি, যশোর। যশোর জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুজ্জামান পিকুলকে শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেই হচ্ছে। রোববার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন শেষে এটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। কারণ চেয়ারম্যান পদে তার পাশাপাশি মারুফ হাসান কাজল নামে আরেক প্রার্থী রয়েছেন। এ কারণে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হওয়ার সুযোগ আর থাকলো না সাইফুজ্জামান পিকুলের।
যদিও, মারুফ হাসান কাজল আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাইফুজ্জামান পিকুলের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলার মতো সক্ষম নন বলে ভোটাররা জানিয়েছেন। গত রোববার ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এদিন চেয়ারম্যান পদে দু’প্রার্থীর মধ্যে কেউই প্রত্যাহার করেননি। তবে, আটটি সাধারণ ওয়ার্ডের ৪০ প্রার্থীর মধ্যে তিনটি ওয়ার্ডে চারজন তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। যারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন তারা হচ্ছেন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে এনায়েত হোসেন লিটন, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সুলতান মাহমুদ বিপুল এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডে আফছার উদ্দিন গাজী ও আলতাফ হোসেন বিশ্বাস। সহকারী রিটার্নিং অফিসার আনিছুর রহমানের কার্যালয়ে হাজির হয়ে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে তারা তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন।
আগামী ১৭ অক্টোবর যশোর জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত ওয়ার্ড ও সাধারণ ওয়ার্ডে মোট ৫৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ২, আটটি সাধারণ ওয়ার্ডে ৪০ ও তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১৩ জন প্রার্থী ছিলেন। সংরক্ষিত ও সাধারণ ওয়ার্ডে যেসব মেম্বার প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন তাদের মধ্যে ছিলেন সংরক্ষিত ১ নম্বর ওয়ার্ডে রেহেনা খাতুন, হাজেরা পারভীন, রাখী ব্যানার্জী, লায়লা খাতুন, নাছিমা সুলতানা, সান-ই-শাকিলা আফরোজ, মরিয়াম বেগম ও বিলকিস সুলতানা সাথী।
সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ জন হচ্ছেন, তাসরিন সুলতানা, রুকসান ইয়াসমীন পান্না ও নাদিরা বেগম। সংরক্ষিত ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ জন হচ্ছেন, সাহানা আক্তার, নাসিম আরা চৌধুরী ও শ্যায়লা জেসমিন। সাধারণ ১ নম্বর ওয়ার্ডে ২ জন হচ্ছেন, সহিদুল আলম ও সালেহ আহমেদ, সাধারণ ২ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ জন হচ্ছেন, ইমামুল হাবিব, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ইকবাল আহমেদ, আনারুল ইসলাম ও সুরত আলী, সাধারণ ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন হচ্ছেন, তৌহিদুর রহমান, কামরুজ্জামান, আসাদুল ইসলাম ও আহসান হাবীব, সাধারণ ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৬ জন হচ্ছেন, প্রদীপ দে, আব্দুর রউফ মোল্লা, জিএম মনিরুজ্জামান, শেখ মাহবুব উর রহমান, ফারাজী আশিকুল ইসলাম বাঁধন ও এমএম আজিম উদ্দিন, সাধারণ ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ জন হচ্ছেন, জয়নাল আবেদীন, সাইফুজ্জামান চৌধুরী, ইউনুছ আলী, এনায়েত হোসেন লিটন ও রাকিব হাসান, সাধারণ ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৭ জন হচ্ছেন, জবেদ আলী, শেখ ইমামুল কবির, অহেদুজ্জামান, সুলতান মাহমুদ বিপুল, সোহেল রানা, রাকিবুল আলম রাকিব ও শেখ আব্দুল মতলেব, সাধারণ ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ২ জন হচ্ছেন, গৌতম চক্রবর্তী ও শহীদুল ইসলাম এবং সাধারণ ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৯ জন হচ্ছেন, জাকির হোসেন, সোহরাব হোসেন, এসএম মহব্বত হোসেন, সাঈদুর রহমান, মাসুদুজ্জামান, আজিজুল ইসলাম, আলতাফ হোসেন বিশ্বাস ও নজরুল ইসলাম খাঁন।
এদের মধ্যে তিনটি সাধারণ ওয়ার্ডে ৪ জন তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেয়ায় শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে দেখা যাবে ৫২ জনকে। তবে, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দিকে সবার নজর। কারণ এটি সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত। এই ওয়ার্ডে জেলা আওয়ামী লীগের দু’টি গ্রুপ থেকে প্রার্থী রয়েছেন। জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১ হাজার ৩১৯ জনপ্রতিনিধি চেয়ারম্যান ও মেম্বার নির্বাচিত করতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এরা সবাই জেলার ৯৩ টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বার ও মহিলা মেম্বার। ভোটারদের মধ্যে ১ হাজার ৭ জন পুরুষ ও ৩১২ জন নারী ভোটার রয়েছেন।
প্রতীক পাওয়ার পরপর প্রার্থীরা সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামবেন। নানা কৌশলে ভোটারদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করবেন। যদিও ভোটাররা নিজেরা জনপ্রতিনিধি হওয়ায় তাদের ম্যানেজ করা ঠকঠকে হবে বলে প্রার্থীরা উল্লেখ করেছেন।
|