কানাইঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি : সিলেটের কানাইঘাটে এসএসসি পরীক্ষার্থী প্রতিবন্ধী নাদিরা তাবাসসুম নামের এক শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার হল রুমে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সে দুর্গাপুর হাই স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী।
পরীক্ষার হল রুমে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের ওএমআর শীট নিয়ে তাকে মানসিক নির্যাতন করা হয়। এ ব্যাপারে ঐ শিক্ষার্থীর পক্ষে তার পিতা নিজাম উদ্দিন কেন্দ্র সচিব বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়- শারীরিক প্রতিবন্ধী নাদিরা তাবাসসুম সিলেট বোর্ডের অধিনে ২০২০-২০২১ শিক্ষা বর্ষের এসএসসি পরীক্ষার্থী। যার রোল নং ৩২৬০১৮। রেজিস্ট্রেশন নং ১৯১৬৮২৩৫০৭। বর্তমানে সে উপজেলার বড়চতুল হাইস্কুল কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে। সবকটি বিষয়ের পরীক্ষা ঠিক মত হলেও গত ২২ সেপ্টেম্বর গণিত পরীক্ষায় সুকলা রানী নামের এক হলগার্ড তাকে মানসিক নির্যাতন করে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের ওএমআর শীট পরিবর্তন করে নেয়। ঐ দিন হলের দায়িত্বে থাকা শিক্ষিকা সুকলা রানী প্রথমেই তাকে আংশিক ছেড়া একটি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের ওএমআর শীট প্রদান করেন। এতে প্রতিবন্ধী ঐ শিক্ষার্থী বার বার সুকলা রানীকে এটি পরিবর্তনের কথা জানালে তিনি তা কর্ণপাত করেননি।
একপর্যায়ে তিনি সমস্যা হবে না বলে ঐ শিক্ষার্থীকে জানালে সে ওএমআর শীটে বৃত্ত ভরাট করতে থাকে। যার নির্ধারিত সময় ছিল ২০ মিনিট। এই সময়ে প্রতিবন্ধী নাদিরা তাবাসসুম ১৫টি প্রশ্নের মধ্যে প্রায় ১২টি প্রশ্নের সঠিক উত্তর ওএমআর শীটে বৃত্ত ভরাট করে নেয়। এমন সময় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে আসছেন জানতে পেরে হলে দায়িত্বে থাকা সুকলা রানী প্রতিবন্ধী নাদিরা তাবাসসুমের আংশিক ছেড়া ওএমআর শীটটি নিয়ে নতুন আরেকটি উত্তরপত্র দেন। তখন নাদিরার হাতে সময় ছিল মাত্র ৫ মিনিট।
এ সময়ের মধ্যে সে পূণরায় তা ভরাট করতে পারেনি বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। এসময় সে তার প্রতিবন্ধী কোঠার অতিরিক্ত সময় চাইলেও তাকে তা দেওয়া হয়নি। বরং হলের দায়িত্বে থাকা শিক্ষিকা সহ আরেক শিক্ষক তাকে নানা কটুকথা বলতে থাকেন। এমনকি হল ভর্তি শিক্ষার্থীর সামনে নাদিরাকে মেন্টাল বলে আখ্যায়িত করা হয়। এতে সে চরম মাসনিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। শিক্ষিকা সুকলা রানীর কারনে সে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় বড় ধরণের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের কাছে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আকুল আবেদন জানিয়েছে। এ ব্যাপারে বড়চতুল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমান জানিয়েছেন তিনি অভিযোগটি শুনেছেন। অভিযোগ শুনার পর হলের দায়িত্বে থাকা শিক্ষিকা সুকলা রানীকে আপাতত কোন হলের দায়িত্বে দেয়া হচ্ছে না। রবিবার এ বিষয়ে তাদের কেন্দ্র কমিটি বৈঠকে বসবেন বলে তিনি জানিয়েছেন। দুর্গাপুর হাই স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব নুর মোহাম্মদ জানিয়েছেন তিনি এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। যা তিনি সিলেট বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে প্রেরণ করেছেন।