সিলেট প্রতিবেদক বর্ষা মৌসুমের শেষে এসে সিলেটে অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সোমবার সকালে মাত্র ৩ ঘণ্টার ১০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা এ সময়ে অস্বাভাবিক বলছে খোদ আবহাওয়া বিভাগ। এদিকে গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে সিলেট নগরী। পাশাপাশি বাড়ছে নদ-নদীর পানিও। ৩ ঘণ্টায় ১০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত
বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা ওসমানী মেডিকেল কলেজের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ
সিলেট ও সুনামগঞ্জে তিন দফা বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আগেই আবারও বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সিলেটের উজানে ভারতের আসাম, মেঘালয় উপত্যকায় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আবার বন্যার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে।
সিলেটের সুরমা-কুশিয়ারাসহ কয়েকটি নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)। পূর্বাভাসে বলা হয়, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এটি অব্যাহত থাকবে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলা সদরের নদ-নদীগুলোর পানি দ্রুত বাড়ছে। চলতি সপ্তাহেই এখানকার নদী-তীরবর্তী ও পাহাড়ি এলাকাগুলোতে বন্যা দেখা দিতে পারে। তবে, বিভাগের হাওরে ফসল না থাকায় বন্যার পানিতে খুব বেশি ক্ষতির আশঙ্কা নেই।
সিলেট আবহাওয়া অফিস সোমবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ১০৮ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। যা আগের দিন ২৪ ঘণ্টায় ছিল ১১৮ দশমিক ২ মিলিমিটার।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘এ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। সোমবার সকালে ৩ ঘণ্টায় অস্বাভাবিক বৃষ্টি হয়েছে। যা এ সময়ে অস্বাভাবিক।’
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র তৌফিক বক্স লিপন বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার দায় স্বীকার করে বলেন, ‘অতিবৃষ্টির কারণে ড্রেনের ধারণক্ষমতা কমে যায়। এ কারণে সাময়িক জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। বৃষ্টি কমার সঙ্গে সঙ্গে পানি নেমে যায়। ড্রেনের ধারণক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে সিটি করপোরেশন।’
গত জুন মাস থেকে তিন দফা বন্যায় সিলেট ও সুনামগঞ্জের প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকা তলিয়ে যায়। এই দুই জেলার বন্যাকবলিত এলাকার হাজার হাজার কোটি টাকার ফসল, রাস্তাঘাট তলিয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দেয়।
ওসমানী মেডিকেল কলেজের পরীক্ষা বন্ধ : জলাবদ্ধতার কারণে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ক্যাম্পাস তলিয়ে গেছে। ফলে সোমবার কোনো ক্লাস ও পরীক্ষা নিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
রোববার রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে গোটা নগরীতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ওসমানী মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসের নিচ তলায় পানি ওঠে। তলিয়ে যায় লেকচার গ্যালারিসহ নিচ তলার ক্লাসরুমগুলো। ক্যাম্পাসের নিচ তলায় হাঁটুপানি থাকায় বিপাকে পড়েন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ক্লাস ও লেকচার গ্যালারি পানিবন্দি থাকায় বন্ধ রাখা হয় ক্লাস ও পরীক্ষা।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শামসুল ইসলাম বলেন, ‘লেকচার গ্যালারিতে পানি ওঠায় ক্লাস নেওয়া যায়নি। আর বিভাগভিত্তিক পরীক্ষাও জলাবদ্ধতার কারণে হয়নি।’