মোঃ রেজাউল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এবার মামলা বাজের খপ্পরে পড়েছেন ৪ সাংবাদিক। কলকাতা টিভির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল তেপান্তর ও সাপ্তাহিক সাকিয়াত পত্রিকার সম্পাদক সীমান্ত খোকন, দৈনিক বাংলা ৭১ ও উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের সম্পাদক প্রবীর সিকদার, ৭১ নিউজ ও দৈনিক বাংলা ৭১ এর বিশেষ প্রতিবেদক গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু ও তেপান্তরের একজন রিপোর্টারের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করেছেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর শাখার সাধারণ সম্পাদক সীতানাথ সূত্রধরের ছেলে সুভাষ সূত্রধর। গত ২৫ জুলাই চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইবুনাল আদালতে মামলাটি করেন তিনি।

মামলার বিবরণে অভিযোগ করা হয়, প্রবীর সিকদারের সম্পাদনায় উত্তরাধিকার ৭১ নিউজে গত বছরের ২৮ মে ‘হামলাকারী সীতানাথ সূত্রধরের একমাত্র ছেলে সুভাষ সূত্রধরকে আজ সকালে চালান করা হয়েছে’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল একই পত্রিকায় (উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ) বাদীর পিতা সীতানাথ সূত্রধরের বিরুদ্ধে- ‘অপকর্মের প্রতিবাদ করায় নবীনগরে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার হুমকী দিল সেই বিতর্কিত সীতানাথ’ শিরোনামে আরেকটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে বাদী ও তার পিতার মানহানী হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

মামলার বিবরণে বলা হয়, অনুরুপ দু’টি সংবাদ একই শিরোনামে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিউজ পোর্টাল তেপান্তর ডট কমেও প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদ দুটিকে ‘মিথ্যা ও মানহানীকর’ দাবী করে এতে বাদী সুভাষ সূত্রধর ও তার পিতা নবীনগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সীতানাথ সূত্রধরের সামাজিক ও কর্ম জীবনের মান সম্মান ক্ষুন্ন হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। তবে এ মামলা হয়রানি ও উদ্দেশ্যমূলক বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত সাংবাদিকরা।

এ বিষয়ে দৈনিক স্বাধীন বাংলার এ প্রতিনিধি সাংবাদিক সীমান্ত খোকনের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, তেপান্তরে যে নিউজ প্রকাশ হয়েছে তা সীতানাথ সূত্রধরের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের উপর ভিত্তি করেই নিউজ করেছি। সীতানাথ সূত্রধর তার প্রতিপক্ষের উপর হামলার ঘটনার পর সীতানাথ সূত্রধরসহ বেশ কয়েকজনকে আসামী করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে মামলা করেন ভোগক্তগী কালীপদ সূত্রধর। তখন ৭ আসামীকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন আদালত। এছাড়াও ওই সংবাদ ১৯ এপ্রিল প্রকাশ হওয়ার পর ২৬ এপ্রিল সীতানাথের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ ছাপা হয় তেপান্তরে। এরপরও তিনি হয়রানীর জন্য উদ্যেশ্যমূলকভাবে মামলা করেছেন। এলাকায় খোজ নিয়ে জানা গেছে, এর আগেও কয়েকজন সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা করে রেখেছেন সীতানাথ।
এ বিষয়ে সাংবাদিক গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু বলেন,‘যখন যা ঘটেছে, একজন সাংবাদিক হিসেবে আমি তা পত্রিকায় তুলে ধরেছি। মূলত আমার সাহসী সাংবাদিকতাকে বন্ধ করতেই সীতানাথ একটি চিহ্নিত প্রভাবশালী মহলের সহযোগিতায় আমার বিরুদ্ধে একের পর এক এসব জঘন্য মিথ্যা ও হয়ামরানীমূলক মামলা করে যাচ্ছেন। এসব হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলায় আমি আর্থিক, শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আমি মারাত্মক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী। তাই একের পর এক মামলা দিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে আমাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। সেজন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর জোরালো প্রতিকার চাচ্ছি।’

এ বিষয়ে জানতে মামলার বাদী এবং বাদীর পিতা সীতানাথ সূত্রধরের মোবাইলে(০১৮১৮-৪৯১৪৩৮) একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন কল রিসিভ করেননি।