স্বাধীন বাংলা ডেস্ক সিলেট-সুনামগঞ্জসহ দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির পথে। অন্যদিকে বন্যা ছড়াচ্ছে মধ্যাঞ্চলে। আবহাওয়াবিদ ও বন্যা বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়ছেন, এ বর্ষায় আরও বন্যা হতে পারে। এ সময় তারা বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারকে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান। সেইসাথে বন্যাপরবর্তী পুনর্বাসন কার্যক্রম বিষয়ে ব্যাবস্থা নিতে সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।
মঙ্গলবার (২১ জুন) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, আবহাওয়া সংস্থাগুলোর গাণিতিক মডেলভিত্তিক পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের অভ্যন্তরে এবং উজানের বিভিন্ন অংশে ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা কম। ফলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। অন্যদিকে কিশোরগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।
আরিফুজ্জামান বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে। এ সময় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। তিনি বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও জামালপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। অন্যদিকে বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলার বন্যা পরিস্থিতির সামান্য অবনতি হতে পারে। তিনি আরও বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় শরীয়তপুর, ফরিদপুর ও রাজবাড়ী জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা সৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড নদনদীর পরিস্থিতি ও পূর্বাভাস প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আটটি নদীর পানি ১৮টি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এখন দেশের ১২টি জেলা বন্যা আক্রান্ত।
দেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াটার অ্যান্ড ফ্লাড ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক একেএম সাইফুল ইসলাম বলেন, এবার বর্ষাকালজুড়ে বন্যা হতে পারে। ঋতু অনুযায়ী বর্ষা মৌসুম সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলার কথা। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তা অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত স্থায়ী হচ্ছে। সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির ইতোমধ্যে উন্নতি হলেও সামনের দিনগুলোতে দেশের মধ্যাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবে। তবে তা সিলেট বিভাগের মতো বিপর্যয় ঘটাবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এ বছরে আরও বন্যা হতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করে ড. মোস্তফা কামাল (গবেষক, কানাডার ইউনিভার্সিটি অব সাসকাচোয়ানের পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক) বলেন, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পূর্বাংশে লা-নিনা অবস্থান করায় এই বর্ষায় আরও বন্যার আশঙ্কা আছে। লা-নিনা অবস্থান করলে সে বছর ভারতীয় উপমহাদেশে গড় বৃষ্টিপাতের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয় এবং গড় বন্যা পরিস্থিতির তুলনায় বেশি এলাকা প্লাবিত হয়। জুলাইয়ের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহে দেশে ব্যাপক বন্যার আশঙ্কা আছে।