দুলাল কৃষ্ণ নন্দী, পটুয়াখালীঃ সামুদ্রিক নোনা জলে উৎপাদিত ‘সীউইড’ সুষম খাবার হিসেবে মানুষের কাছে পরিচিতি করতে হবে। এটি উৎপাদন করে ভোক্তাদের কাছে জনপ্রিয় করে তুলতে পারলে উপকূলীয় এলাকার মানুষ সাবলম্বি হবে, দেশ হবে সমৃদ্ধ। ২০১৯ সাল থেকে আমরা উৎপাদন শুরু করেছি। আগামীতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বহির্বিশে^ও রপ্তানী করে অর্থনৈতিকভাবে দেশ সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে বলে দাবি করেছেন মৎস্য ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি।
শুক্রবার দুপুরে মৎস্য গবেষনা ইনন্সিটিটিউট মৎস্য ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রনালয়ের উদ্যোগে কুয়াকাটায় আয়োজিত একদিনের ‘সীউইড’ মেলা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় মন্ত্রী সীউইড উৎপাদন প্রসঙ্গে বলেন, কুয়াকাটা-কলাপাড়ার সকল ব্যবসায়ী ও হোটেল-মোটেল মালিকসহ স্থানীয় জনসাধরণকে সচেতন করা ও উদ্বুদ্ধকরার মাধ্যমে সীউইউ উৎপাদন এবং খাওয়ার অভ্যস্তকরণে মানুষের আমিষের ঘাটতি মেটাতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বাড়ানোর জন্য এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। আগে আমরা এই খাবারকে গুরুত্ব দিতাম না। আগে দেশে গড় আয়ু বেশি ছিলো না। এখন বৃদ্ধি পাচ্ছে মানুষের সচেতনতার কারণে।
কুয়াকাটা পর্যটন হলিডে হোমস এর মিলনাতনে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, দেশের কিছুসংখ্যক মানুষ দেশের উন্নয়ন দেখছেন না। তারা উন্নয়নের সুবিধা নিবেন, কিন্তু প্রসংশা করতে জানেন না। তারা সবসময় চোরাবালিতে গুপ্ত পথ খুঁজে ক্ষমতায় যেতে চায়। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে তা প্রতিহত করতে হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলে দেশের টাকায় পদ্মাসেতু হয়েছে। আগামী ২৫ জুন এই সেতু উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের চেহারা অর্থনৈতিকভাবে পাল্টে যাবে। এটি এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতার দ্বার প্রান্তে। উপকূলীয় অঞ্চল উন্নয়ন হচ্ছে আওয়ামী লীগেরই আমলে। এই সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণ উপকূলীয় এলাকার অর্থনৈতিক ভাবে দেশকে উন্নত শিখরে নিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।
উদ্বোধনী সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, মৎস্য অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক প্রমুখ।
উল্লেখ্য, উপকুলীয় জনগোষ্ঠীর বিশেষত মৎস্যজীবি ও জেলে সম্প্রদায়, গৃহিনীরা এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সরাসরি উপকৃত হবেন। মৎস্যজীবি ও জেলে সম্প্রদায়ের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এই সীউইড উৎপাদনের মাধ্যমে। গৃহিনীরা পারিবারিক পুষ্টি বিশেষত দৈনন্দিন খাবারে অপুষ্টির অভাব দূরীকরণে ‘সীউইড’জাত খাদ্য ব্যবহারের সুযোগ পাবে। এমনকি কুয়াকাটাসহ অত্র অঞ্চলের হোটেল মোটেল, রেষ্টুরেন্টে এবং রপ্তানী বাণিজ্যে সীউইডই বিশেষ ভূমিকা পালন করবে এবং এর মাধ্যমে সুনীল অর্থনীতির মূল লক্ষ্য বাংলাদেশ অর্জন করতে পারবে বলে উপস্থিত বিশেষজ্ঞরা সভায় উপস্থাপন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, কলাপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান এস, এম রাকিবুল আহসান, ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বাবুল, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহীনা পারভীন সীমা, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ বৃন্দ।