বালাগঞ্জ প্রতিনিধি সিলেট শহরসহ অন্যান্য উপজেলায় পানি যত কমছে, বালাগঞ্জ উপজেলায় পানি তত বাড়ছে। ফলে বন্যা আক্রান্ত হচ্ছে বালাগঞ্জ উপজেলা। উপজেলা ৬টি ইউনিয়ন বন্যায় আক্রান্ত। উপজেলার ১৩,২০৫টি পরিবারের মধ্যে বন্যা আক্রান্ত ২১৬১টি পরিবার। ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ। ১০টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বালাগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রীতি ভুষন দাশ জানান, ২৩মে পর্যন্ত ২৬টন ৩শত ৩০ কেজি চাউল, নগদ ১লক্ষ টাকা, ৫`শ প্যাকেট খাদ্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে। বালাগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নির্মল চন্দ্র বনিক জানান ৪৮জন মৎস্যচাষীর ক্ষতিগ্রস্থ পুকুর ও খামার ৭০টি, ক্ষতিগ্রস্থ মাছের পরিমাণ ৭মেঃ টন, পোনা মাছ ক্ষতির পরিমাণ ১লক্ষ টাকা, মাছ চাষের অব কাঠামো ক্ষতির পরিমাণ ৩লক্ষ টাকা। তিনি জানান বন্যায় মোট ক্ষতির পরিমাণ ১৩লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা যায় ২৫০জন কৃষকের আউশ ধানের বীজতলা ক্ষতি হয়েছে ১০হেক্টার, যা টাকার হিসাবে ১৫লক্ষ, ২৭০জন সবজি চাষীর সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে ১২হেক্টর, যা টাকার হিসাবে ২০লক্ষ টাকা। ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ক্ষতি হয়েছে বেশী বালাগঞ্জ, বোয়ালজুড়, পশ্চিম গৌরীপুর। পূর্ব পৈলনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শিহাব উদ্দিন জানান নদী তীরবর্তি হওয়ায় অধিকাংশ ইউনিয়নই আক্রান্ত। ত্রাণ এর পাশাপাশি বন্যা পরবর্তি পূর্নবাসনের জন্য বরাদ্দ দাবী করেছেন।
পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মাখন জানান আমার ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত। তিনি বলেন ইতিমধ্যে বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মফুর ও বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোজিনা আক্তার আমার ইউনিয়ন পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন আমার গোটা ইউনিয়ন একাধিক দ্বীপ আকার ধারন করে আছে। মানুষ পানি বন্দি। তিনি ত্রাণের দাবী করেছেন।
বালাগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রকিব ভুইয়া জানান ৩টি বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষে পানি আর ২টি বিদ্যালয়ের আঙিনায় পানি ফলে ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ। তিনি শিশুদের কে পানি থেকে দূরে রাখার আহবান করেছেন অভিভাবদের প্রতি। বালাগঞ্জ উপজেলা অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী সেবা কেন্দ্রের সভাপতি শাহাব উদ্দিন শাহিন জানান প্রতিবন্ধীরা অসহায় জীবন যাপন করছেন পানি বন্দি অবস্থায়। তাদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দাবী করেছেন।
বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোজিনা আক্তার জানান, প্রতিদিনই বন্যার তথ্য সংগ্রহ করে ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করেই ইউনিয়ন পর্যায়ে ত্রাণ প্রেরণ করা হচ্ছে। ত্রাণের কোন অভাব নেই। আরো ত্রাণ আসার কথা জানিয়েছেন তিনি। বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মফুর জানান সিলেট এর অন্যান্য উপজেলার পানি কমলে, বালাগঞ্জ উপজেলায় পানি বাড়ে। বন্যা দেখা দেয়। উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নই হাওড় এবং নদীর তীরবর্তী। ফলে উজানের পানি নামার সময় বন্যা দেখা দেয় বালাগঞ্জ উপজেলায়।