বঙ্গবন্ধু টানেলে বদলে যাচ্ছে আনোয়ারা, আধুনিক শহরের হাতছানি
13, May, 2022, 6:38:28:PM
আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশ ভেদ করে তৈরী হচ্ছে দেশের প্রথম টানেল বা সুড়ঙ্গ পথ। যা দিয়ে যাতায়ত করবে সব ধরণের যানবাহন। শুনলে রূপকথার গল্প মনে হলেও তার সত্যিকারের রূপ দেখতে অপেক্ষা করতে হবে আর মাত্র ক’টা মাস।
স্বপ্নের এই টানেলটির নির্মানকাজ প্রায় শেষের দিকে, সবকিছু ঠিক থাকলে এ বছরের শেষ অথবা আগামী বছরের প্রথম দিকে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
দেশের প্রথম এই টানেলটির নামকরণ করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’ নামে। এই টানেলের নির্মাণে খরচ হচ্ছে প্রায় ১০ হাজার ৪৪ কোটি টাকা।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা নেভাল একাডেমির পাশ দিয়ে শুরু হয়ে নদীর তলদেশ ভেদ করে এটি উঠেছে দক্ষিণ পাড়ের আনোয়ারা প্রান্তে। নদীর ভেতরে মূল পথের দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৩.৩২কিলোমিটার।
টানেলটি চালু হলেই বদলে যাবে পাহাড় আর সাগরের মোহনায় গড়ে উঠা আনোয়ারা উপজেলার দৃশ্যপট। এখানে গড়ে উঠবে আরেক নতুন চট্টগ্রাম। সম্প্রসারিত হবে আবাসনসহ বিভিন্নন ধরণের ব্যবসা বাণিজ্য। ফলে আনোয়ারা পরিণত হবে চিনের সাংহাইয়ের আদলে ওয়ান সিটি টু টাউনে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের সমীক্ষা অনুযায়ি বছরে প্রায় ৭০ লক্ষাধিক ছোট বড় যানবাহন চলাচল করবে কর্ণফুলী টানেলের ভেতর দিয়ে। এই বিশাল অংকের গাড়ির চাপ সামাল দিতে ৩৯০ কোটি টাকান ব্যায়ে পিএবি (পটিয়া-আনোয়ারা-বাঁশখালী) সড়কের শিকলবাহ ওয়াই জংশন থেকে আনোয়ারার কালাবিবির দিঘি চত্বর পর্যন্ত ৮.১০ কিলোমিটার ১৮ ফুট প্রস্তের সরু এই সড়কটিকেও উন্নীত করা হচ্ছে ছয় লেনে। যার প্রস্ত হবে ১৬০ ফুট। ১৬০ ফুটের ছয় লেনের মধ্যে ১২০ ফুটে হবে চারটি লেন, যা দিয়ে চলবে বড় বড় যানবাহন আর বাকি ৪০ ফুটে হবে দু’টি লেন যা দিয়ে চলবে স্থানীয় ছোট যানগুলো।
টানেলের দক্ষিণ প্রান্তের সংযোগ সড়কটি পিএবি সড়কের চাতরী চৌমুহনী এলাকায় মিলিত হবে। এ সড়ক ধরেই টানেল হয়ে আসা সব গাড়ি যাবে চট্টগ্রাম শহর ও কক্সবাজার জেলায়। এ ছাড়াও মহেশখালীর মাতার বাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, মহেশখালীতে স্থাপিত এলএনজি স্টেশন এবং বাঁশখালীতে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম কয়লাভিত্তিক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মত মেগা প্রকল্পগুলোতে যাতায়তের মাধ্যম হবে আনোয়ারার উপর দিয়েই। ফলে আনোয়ারায় গড়ে ওঠা কোরিয়ান ও চায়না অর্থনৈতিক অঞ্চলের সাথে এসব মেগা প্রকল্পে যাতায়ত ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক ভূমিকা রাখবে বঙ্গবন্ধু টানেল।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর টানেলটির ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পর থেকেই পুরোদমে চলে আসছে এর নির্মান কাজ।