আতিকুল ইসলাম আতিক, সিলেট: রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে যুক্তরাজ্যে। দেশটিতে হু হু করে বাড়ছে নিত্যসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিনই সেখানে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশটির নাগরিকরা অনেকটা বিপাকে পড়েছেন। জ্বালানী তেলের মূল্য এখন আকাশচুম্বি। অনেক পাম্পে জ্বালানী তেল পাওয়াও যাচ্ছে না। দেশটির সর্বশেষ পরিস্থিতির বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন লন্ডনের কিংসটন শহরের ব্যবসায়ী সৈয়দ সাজিদ উদ্দিন কামরান। সিলেটের শেরপুরের আল-সৈয়দ শপিং কমপ্লেক্সের মালিক সৈয়দ কামরান আরও জানালেন রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব যুক্তরাজ্যকে বেকায়দা ফেলতে পারে। রোববার গভীর রাতে যুক্তরাজ্যের নাজুক পরিস্থিতির কারণে গভীর উদ্বেগও প্রকাশ করেন তিনি।
সৈয়দ কামরান জানাচ্ছিলেন, জ্বালানী তেলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক পাম্পে জ্বালানী তেল পাওয়া যাচ্ছে না। এই তেলের দামও বেড়ে গেছে। ১০ এপ্রিল প্রতি লিটার ডিজেল এক পাউন্ড ৮০ পেনিতে কিনতে হয়েছে। বাংলাদেশি টাকায় ২০০ টাকার উপরে। প্রতি লিটার পেট্্রল এক পাউন্ড ৬৫ পেনিতে কিনতে হয়েছে। জ্বালানী তেল কিনতে গিয়ে এক পাম্প থেকে আরেক পাম্পে ছুটতে হয়েছে।
তিনি জানান, প্রতিটি নিত্য প্রয়াজনীয় জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বাড়ছে। খাবার তেল, চাল, ডাল, আটা, ময়দাসহ শিশু খাদ্যের দাম দ্বিগুন হয়ে গেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। সকালে দোকানে পণ্য তোলার পর বিকেলের আগেই তা শেষ হয়ে যায়। ফলে অনেক ক্রেতা সন্ধার পর জিনিসপত্র কিনতে গেলে চাহিদা অনুযায়ী পান না।
সৈয়দ কামরান জানান, ইতোমধ্যে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লোকজন বেকার হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে অনেক সিলেটিও আছেন। ফলে পরিস্থিতি দিনদিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশ তথা সিলেট থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী লন্ডনে গেছেন। তারা কোনো ধরণের কাজ পাচ্ছেন না। এতে ওইসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিপর্যয় নেমে এসেছে।
সৈয়দ কামরান বলেন, যুক্তরাজ্যে গত ৪০ বছরেও এ ধরণের ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি দেখেননি তিনি। ইরাক যুদ্ধের সময় কোনো প্রভাব পড়েনি। ২০০৮ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত অর্থনৈতিক সংকট ছিল দেশটিতে। তখনও এমন অবস্থা হয়নি। সর্বশেষ করোনাকালেও কোনো সংকট সৃষ্টি হয়নি। কিন্তু রাশিয়া ও ইউক্রেনের কয়েকদিনের যুদ্ধে বিপর্যয় নেমে এসেছে দেশটিতে। যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে পরিস্থিতি নাজুক পর্যায়ে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানালেন তিনি।