কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার রাজাগঞ্জ ইউপির ৩নং ওয়ার্ডের মির্জাগড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত চেয়ে পুনঃ নির্বাচনের দাবী করছেন পরাজিত ৫ সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের ২জন সদস্য প্রার্থীরা। এ বিষয়ে তারা নির্বাচনের দিন ভোট চলাকালে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার সুমন হোসেলের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ এনে সম্প্রতি সিলেট জেলা প্রশাসক, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, পঞ্চম ধাপের তফসিল অনুযায়ী গত ৫ জানুয়ারী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মির্জাগড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মোঃ সুমন হোসেন ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৩নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য প্রার্থী হেলাল আহমদের পক্ষ অবলম্বন করে তার প্রতীক টিবওয়েল প্রতীকের সর্মথকদের ব্যাপক জাল ভোটের সুযোগ দেন। বহিরাগতরা টিউবওয়েল প্রতীকে জাল ভোট দিলে যা বার বার প্রিসাইডিং অফিসার সুমনের কাছে এ ওয়ার্ডের প্রতিদ্বন্দ্বি সাধারণ সদস্য পদপ্রার্থীরা অভিযোগ দিলেও তিনি আমলে নেননি। উল্টো তাদের তিনি ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। একপর্যায়ে ভোট কেন্দ্রে দাঙ্গা সৃষ্টি করে নিজের ইচ্ছামত নির্ধারিত সময়ের পূর্বে ভোটগ্রহন বন্ধ করে জাল ও বাতিল ভোট টিউবওয়েল প্রতীকের পক্ষে ঢুকিয়ে ভোট গণণা করে তাকে মৌখিক ভাবে ২ ভোট বেশি দেখিয়ে হেলাল আহমদকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।
ভোগ গণণাকালে ব্যাপক জালজালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ওয়ার্ডের কোন সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা সদস্যদের ভোটের রিজাল্ট সীট এজেন্টদের না দিয়ে কেন্দ্র থেকে চলে যান প্রিসাইডিং কর্মকর্তা। এমনকি সকাল ৮টার পরিবর্তে মির্জাগড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে সাড়ে ৮টায় ভোট গ্রহন শুরু হয়।
এ ছাড়াও তারা অভিযোগে উল্লেখ করেছেন যে, প্রিসাইডিং অফিসার সুমন হোসেন নির্বাচনের পূর্বের রাতে নির্বাচনী আচারণ বিধি লঙ্গন করে পোলিং অফিসারদের নিয়ে সদস্য প্রার্থী হেলাল আহমদের বাড়িতে রাতের খাবার খান এবং তিনি সেখানে রাত্রি যাপন করে সকাল বেলা ভোট কেন্দ্রে আসেন তিনি। কোন কোন প্রার্থীর নিকট থেকে বিকাশের মাধ্যমে ও নগদ টাকা নেন। অভিযোগে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সুমন হোসেন ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভোট গ্রহন ও গণনাকালে ব্যাপক জালজালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে সদস্য প্রার্থী হেলাল আহমদ টিউবওয়েল প্রতীকের পক্ষে অবলম্বন করায় তদন্ত পূর্বক প্রিসাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহনসহ পুনরায় রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের নির্বাচনী ফলাফল স্থগিত করে পুনরায় ভোট গণণা ও পুনঃ নির্বাচনের বিহীত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান পরাজিত সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের সদস্যরা। গত ১১ জানুয়ারি সিলেটের জেলা প্রশাসক একই তারিখে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও ৯ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তার বরাবরে উল্লেখিত অভিযোগ এনে লিখিত দরখাস্ত দায়ের করেন ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য পদপ্রার্থী মুহিবুর রহমান, ছয়ফুল আলম শিকদার, আলী হোসেন, মোহাম্মদ সোহাগ মিয়া, বর্তমান ইউপি সদস্য আছা মিয়া চৌধুরী সংরক্ষিত ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের মহিলা সদস্যা পদপ্রার্থী সাইদা বেগম, আজিরুন নেছা। এ ছাড়া উক্ত ভোট কেন্দ্রে পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে গত শনিবার বিকেল ৫টায় স্থানীয় রাজাগঞ্জ বাজারে প্রতিবাদ সভা করেন পরাজিত সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য প্রার্থীরা।