এস এম মাসুদ রানা বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
বিরামপুর উপজেলা থেকে বিলুপ্তির পথে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের সাদা বক। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখন আর খাবারের সন্ধানে বিল-নদী জলাশয়ে আসা সাদা বকের খুব বেশি দেখা মেলেনা এ উপজেলায়।

বনভূমি উজাড় আর কিছু অসাধু পাখি শিকারীদের দৌরাত্ম্যে হারিয়ে যেতে বসেছে এই বক। অথচ আমাদের বাংলা কবিতা ও সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশাল জায়গা দখল করে আছে বিভিন্ন রকমের বক। কখনও মেঘাচ্ছন্ন আকাশে ঝাঁক বেঁধে উড়ে চলা, কখনও দিগন্ত বিস্তৃত মাঠের সবুজ গালিচার সৌন্দর্য্য বাড়িয়ে দিত ঝাঁকে ঝাঁকে এই সাদা বক। আবার কখনও দলবদ্ধ হয়ে উড়তে উড়তে একসময় মিশে যেত দূর আকাশ নিলীমায়। আর এই উড়ে যাওয়া মানেই প্রস্থান নয়। এ বিল থেকে ও বিলে অথবা দিন শেষে কোন বন কিংবা বাঁশঝাড়ে নিজ নীড়ে ফিরে যেত এই বকগুলো। প্রাকৃতিক নান্দনিক পাখি বক, বকের কলরব এখন শুধুই স্মৃতি।

আট প্রজাতির সাদা বকের মধ্যে আমাদের দেশে রয়েছে পাঁচ প্রজাতির সাদা বক। আকারে ৪৫ থেকে ১শ’ ৫০ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। পা ও লম্বা ঠোঁট ছাড়া এদের সারা দেহ সাদা পালকে আবৃত। নিষিদ্ধ হলেও কিছু অসাধু শিকারীর গুলি করে বক নিধন করছে, আবার কেউ ফাঁদ পেতে আবার কেউ কেউ পোষা বক দিয়ে বুনো বক ধরছে। সম্প্রতি এ উপজেলায় ৭নং পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়নের এক ঝাঁক বকের দেখা মেলে। বিলের মাঝে সুবজ ঘাসে ওঁৎ পেতে আছে পাশের ঝিলে মাছ শিকারের আশায়। এ যেন
অবাক করা সৌন্দর্য। বকের সৌন্দর্য দেখে অভিভূত হয়ে ছবি তুলতে গেলে সাদা পালক ঝাপটে বকগুলো একটু একটু করে দূরে সরে যাচ্ছিল। মনে হলো পৃথিবীটা যেন একটু খানি বদলে যাচ্ছে। জলাবায়ু পরিবর্তন আর বনভূমি উজাড়ের কারণে বক যেন আমাদের জনবসতি থেকে অভিমানেই দুরে চলে গেছে।