শ্রীমঙ্গলে স্কুল শিক্ষিকার শ্লীলতাহানির অভিযোগ নিয়ে বিভ্রান্তি
3, August, 2021, 2:01:43:PM
আবুজার বাবলা, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: শ্রীমঙ্গলে এক প্যারা শিক্ষিকার শ্লীলতাহানির অভিযোগ নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার আশিদ্রোন ইউপির হোসনাবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শ্রীমঙ্গল থানায় একই স্কুলের প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব দেয়ার অভিযোগে করেন।
সরেজমিন পরিদর্শনে শিক্ষিকা জানান, ‘গত ৬ জুলাই বিকালে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন পিটু তাকে স্কুলে ডেকে নেয়। এসময় তিনি অপরাজিতা (ছদ্মনাম) নামে অপর এক শিক্ষিকার সাথে সম্পর্ক গড়ে দেয়ার আবদার করেন। তা অস্বীকার করলে প্রধান শিক্ষক ক্লাস রুমে বসে মদ পান করে অশ্লীল কথাবার্তা বলে এবং রুমে আটকে রাখার চেষ্টা করে’।
প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন পিটু এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘গত কয়েকদিন আগে স্কুলের কাজে শহর থেকে কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক-শিক্ষিকা স্কুলে আসেন। এক পর্যায়ে মেয়েটি উপস্থিত শিক্ষক শিক্ষিকাদের কটাক্ষ করেন। এ ঘটনায় শিক্ষকরা ক্ষুদ্ধ হয়ে মেয়েটির উদ্বত আচরণের জন্য স্কুল খোলা অব্দি স্কুলে না আসার ব্যবস্থা নিতে আমাকে অনুরোধ করেন। এই ঘটনায় ৬ জুলাই শিক্ষিকাকে স্কুলে ডেকে নিয়ে ভৎর্সনা করেন। এই আক্রোশে সে এমন উদ্ভট অভিযোগ করতে পারে’ বলে জানান। তিনি বলেন, ‘হোসনাবাদ চা বাগানের মালিক পক্ষের সাথে আমার সু সম্পর্ক থাকায় বাগানের ব্যবস্থাপক এম কে পারিয়াল ঈর্ষান্বিত হয়ে আমাকে বদলী করতে উঠে পড়ে লেগেছে। চা পাতা ও বাগানের গাছ চুরির মতো অনৈতিক কাজে বাধা দেয়ায় সে মেয়েটিকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ দাঁড় করায়। তবে ব্যবস্থাপক এমকে পারিয়াল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
স্কুলের এক শিক্ষিকার মা মুক্তা দেব বলেন, ৩০ বছর ধরে প্রধান শিক্ষককে চিনি। তার আচরণে খারাপ কিছু দেখিনি। স্কুল ব্যবস্থাপনা পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি তরিকুল ইসলাম, পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি পরেশ তাঁতী ও সম্পাদক আব্দুল মালেকের সাথে কথা বলে শ্লীলতাহানীর অভিযোগের সত্যতা মেলেনি। স্থানীয় চা দোকানদার মালেক মিয়া বলেন, ‘এদিন সে একটি কোমল পানীয়র বোতল ও বিস্কিট নিয়ে সেখানে যায়। পিটু স্যার মেয়েটিকে বকা ঝকা করায় মেয়েটিকে নিরবে বারান্দার গ্রীল ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি। মেয়েটিকে খারাপ কিছু বলতে দেখেনি’।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি জহর তরফদার বলেন, প্রধান শিক্ষক কর্তৃক মেয়েটির গায়ে হাত দেয়ার কোন অভিযোগের সত্যতা মেলেনি।
এদিকে মেয়েটির অভিযোগের প্রেক্ষিতে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার তদন্ত করে এরিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।