ক্রীড়া ডেস্ক : আলেহান্দ্রো গোমেসের শুরুর একমাত্র গোলে প্যারাগুয়েকে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। এই জয়ে কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে পা রাখলো আলবিসেলেস্তেরা।
এর আগে সবশেষ ২০১৫ সালের কোপা আমেরিকায় প্যারাগুয়েকে হারায় আর্জেন্টিনা। জয়ের ব্যবধানটা ছিল ৬-১। এর পর প্যারাগুয়ের বিপক্ষে তারা জিততেই ভুলে গিয়েছিল! জয় ছিল না ৪ ম্যাচে। কিন্তু জয়ের ধারায় ফেরা আলবিসেলেস্তেদের সামনে এবার আর হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারেনি প্যারাগুয়ে। আর্জেন্টিনা জিতেছে ১-০ গোলে। তাতে কোপার কোয়ার্টার ফাইনালও নিশ্চিত হয়ে গেছে মেসিদের।
সর্বশেষ ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে যে একাদশ নিয়ে মাঠে নেমেছিল আর্জেন্টিনা; আজ তাতে ৬টি পরিবর্তন আনেন স্কালোনি। রক্ষণে তাগলিয়াফিকো এবং পেজ্জেলাকে নামানো হয় ওতামেন্দি ও আকুনার জায়গায়। মিডফিল্ডে দে পল এবং লো সেলসোকে সরিয়ে আনা হয় গোমেস ও পারেদেসকে। আক্রমণে লাউতারো মার্তিনেস ও নিকোলাস গঞ্জালেসের জায়গায় নামেন ডি মারিয়া ও সার্জিও আগুয়েরো।
পরিবর্তনের পরেও শুরু থেকে ভীষণ আত্মবিশ্বাসী দেখা গেছে মেসিদের। খেলার ধারায় ৮ মিনিটে সবচেয়ে সুবর্ণ সুযোগটি মিস করেন আগুয়েরো। প্যারাগুয়ের খেলোয়াড়দের ভুলে বক্সের ভেতরে বল পেয়ে গিয়েছিলেন আগুয়েরো। তবে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি এক বছরের বেশি সময় পর শুরুর একাদশে ফেরা এই স্ট্রাইকার।
এর দুই মিনিট পরই প্রথম গোল পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। এসময় গোল করে দলকে এগিয়ে নেন আলেহান্দ্রো গোমেজ। শুরুতে মিডফিল্ড থেকে বল নিয়ে ক্ষীপ্র গতিতে দৌড় দিয়েছিলেন মেসি। ডানপ্রান্তে তিনি পাস দেন ডি মারিয়াকে। প্যারাগুয়ে খেলোয়াড়কে কাটিয়ে পেনাল্টি এরিয়ায় দেওয়া তার থ্রু বল ধরেই জাল কাঁপান গোমেজ।
অষ্টাদশ মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন মেসি। বার্সেলোনা তারকার ফ্রি কিক একটুর জন্য থাকেনি লক্ষ্যে। ধীরে ধীরে নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে পাল্টা আক্রমণে যায় প্যারাগুয়ে। তবে গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেসের তেমন কোনো পরীক্ষা নিতে পারেনি তারা।
২৬ মিনিটে সুযোগ তৈরি করেও এসপিনোলা শট নেন লক্ষ্যের অনেক বাইরে। ৪৫+১ মিনিটে প্যারাগুয়ের আত্মঘাতী গোলে ব্যবধান ২-০ হয়ে গিয়েছিল আর্জেন্টিনার। কিন্তু প্রারম্ভিক শটের সময় ডি মারিয়া অফসাইড পজিশনে থাকায় ভিডিও রিভিউতে বাতিল করা হয় সেই গোল।
দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে প্যারাগুয়ে আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত করে তুলেছিল মেসিদের। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। বাম প্রান্তে আলমিরোন ত্রাস ছড়ালেও আর্জেন্টাইন ডিফেন্সের দৃঢ়তায় সফল হতে পারেননি। যোগ হওয়া সময়ে ফ্রি কিক থেকে মেসি শট নিলেও সেটি রুখে দেন প্যারাগুয়ে গোলরক্ষক।
এই ম্যাচ দিয়েই আর্জেন্টিনার হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডে হাভিয়ের মাসচেরানোকে স্পর্শ করেন মেসি। দুজনেরই ম্যাচ এখন ১৪৭টি।
অপরদিকে হতাশার বৃত্ত থেকে বের হতে পারেনি উরুগুয়ে। আর্জেন্টিনার কাছে হারের পর চিলির সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে সুয়ারেজরা। তাতে শেষ আট নিশ্চিত হয়েছে চিলির।
ভালো সূচনায় ২৬ মিনিটে এগিয়ে গিয়েছিল চিলি। ভারগাসের গোলে অগ্রগামিতা পায় তারা। শেষ চার ম্যাচে স্কোর না পাওয়া উরুগুয়ে সমতা ফেরায় দ্বিতীয়ার্ধে। কর্নার থেকে পাওয়া বলে পা ছোঁয়ার চেষ্টা করেছিলেন পোস্টের সামনে দাঁড়ানো সুয়ারেজ। পাশে থাকা ভিদালের পা জড়িয়ে যাওয়ায় আত্মঘাতী গোলের খাতায় নাম লেখায় সেটি।
ড্র দিয়ে শুরু করা আর্জেন্টিনা ৩ ম্যাচ পর অর্জন করেছে ৭ পয়েন্ট। জয় তাদের দুটি। সমান ম্যাচে চিলির সংগ্রহ ৫। ২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে প্যারাগুয়ে অবস্থান করছে তিনে। এর পরেই উরুগুয়ের স্থান। যাদের সংগ্রহ ২ ম্যাচে মাত্র ১ পয়েন্ট।