জীবনশৈলী ডেস্ক : সারাদেশে বইছে শীতের আমেজ। এরই মধ্যে উত্তরের জেলাগুলোতে ধীরে ধীরে জেঁকে বসছে শীত। দিনে রোদের তাপ থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশা পথঘাটে দৃষ্টিসীমা হরণ করছে। রাত বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে কুয়াশার গাঢ়ত্ব। কুয়াশার চাদর ফুঁড়ে উঁকি দিচ্ছে প্রভাতের সূর্য। শীতের আমেজ বোঝা যাচ্ছে রাজধানীতেও। ভোরে বাসা থেকে বের হলেই শীত অনুভূত হয়। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে শীতের আবহ কেটে গেলেও আগের মতো গরম পড়ছে না। রোদের তেজও কমেছে।
এই মৌসুমের মিশ্র আবহাওয়ায় বড়দের খাপ খাওয়াতে সমস্যায় পড়তে হয়। সেখানে ছোটদের আরও বেশি সমস্যা। স্বাস্থ্য সমস্যার মধ্যে প্রথমে চলে আসে জ্বর, ঠান্ডাজনিত সর্দি-কাশি। বিশেষত শীতের শুরুতে তাপমাত্রা যখন কমতে থাকে, তখনই এর প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এটা মূলত শ্বাসতন্ত্রের ওপরের অংশের রোগ। চিকিৎসা করলেও ৭ দিন লাগে। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে কাশি কয়েক সপ্তাহ থাকতে। আর শীতে শিশুরা একটু বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তবে দুশ্চিন্তা না করে এ সময়টাতে শিশুদের বিশেষ পরিচর্যা নিলে শীতেও আপনার সোনামণি থাকবে সুস্থ। জেনে নিন শীতে শিশুর যত্নে করণীয় সম্পর্কে :-
এক. শীতের কনকনে ঠান্ডা থেকে শিশুকে রক্ষা করতে অনেকেই মোটা সোয়েটার, দস্তানা, মোজা দিয়ে ঢেকে রাখার চেষ্টা করি। কিন্তু শীতকালীন এসব প্রয়োজনীয় জিনিস শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় হলেও খুব বেশি উষ্ণতা তার জন্য অস্বস্তি বোধ হতে পারে। এজন্য শিশুকে কাপড় পরানোর আগে আপনার ঘরের তাপমাত্রা মূল্যায়ন করতে হবে; সেই তাপমাত্রা অনুযায়ী শিশুকে পোশাক পরান। শিশুকে এমন পোশাক পরাবেন যা তার শরীর ঢেকে রাখে। তবে এমন কাপড় পরাবেন না যা তার চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে।
দুই. আপনার শিশুর ঘর উষন রাখার জন্য গরম তাপমাত্রা বজায় রাখুন। আপনি যদি এমন কোনও জায়গায় বসবাস করেন যেখানে বেশিরভাগ সময় রাতেই ঠাণ্ডায় পড়ে, তবে জানালা বন্ধ করে রাখুন। যদি আপনার শিশুর ঘরে হিটার ব্যবহার করেন তবে ঘরের তাপমাত্রা তার পক্ষে স্বাচ্ছন্দ্যজনক কিনা তা পরীক্ষা করে দেখুন। এটি খুব বেশি গরম হওয়া উচিত না। এছাড়া, আপনার শিশুর ঘর বায়ু চলাচল উপযুক্ত রাখুন।
তিন. শীতকালে শিশুকে ম্যাসাজ করার ব্যাপারে চিন্তার প্রয়োজন নেই, কারণ একটা মালিশ তার ত্বক এবং স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী হয়ে উঠতে পারে। ভিকস বেবিরাব এর মতো একটি প্রশমনকারী বাম দিয়ে আপনার শিশুকে ম্যাসেজ করলে তা তার ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখতে এবং সেটি শুকিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করবে। নিয়মিত ম্যাসেজ শিশুর রোগ প্রতিরোধ কার্যক্ষমতার উন্নতি করতে সহায়তা করবে। সুতরাং, প্রতিদিন শিশুকে রুটিন করে মালিশ করার চেষ্টা করবেন।
চার. শিশু যদি ঘুমের সময় জোরে জোরে শাঁ শাঁ শব্দের সাথে শ্বাস ফেলে বা মারাত্মক কাশে তাহলে বুঝবেন সে হয়তো কোনও সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে। তাই তাকে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। আর যদি এটি একটি সাধারণ সর্দি–কাশি হয় এবং অবস্থাটি খুব তীব্র না হয় তবে আপনি ঘরোয়া প্রতিকারগুলো বেছে নিতে পারেন।
পাঁচ. গোসল করানোর পরে আপনার শিশুর দিকে খেয়াল না করলেব তার সর্দি-কাশি হয়ে যেতে পারে। শীতের সময় শিশুকে গোসল করালে গরম পানি ব্যবহার করুন এবং বাথরুম ও ঘরের তাপমাত্রার মধ্যে একটা ভারসাম্য বজায় রাখুন। গোসলের পরে তাকে তোয়ালে দিয়ে জড়িয়ে রাখুন এবং দেরি না করে পোশাক পরিয়ে দিন।