হাটহাজারীর মাহফিলে বক্তব্য রাখেননি হেফাজত নেতা মামুনুল হক
28, November, 2020, 10:12:44:AM
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : হাটহাজারীতে বক্তব্য রাখেননি হেফাজত নেতা মামুনুল হক। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করা হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে চট্টগ্রামে প্রতিরোধ করতে গত দুদিন ধরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবসহ নগরীর বিভিন্ন মোড়ে কর্মসূচি পালন করেছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। এ সব কর্মসূচি চলার মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে সড়কপথে চট্টগ্রাম শহর হয়ে হাটহাজারী মাদ্রাসায় পৌঁছেছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফতে মসলিসের মহাসচিব মামুনুল হক।
হাটহাজারী উপজেলার পার্বতীপুর উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে তিন দিনব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে তিনি পূর্বঘোষিত প্রধান বক্তা ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গতকাল শুক্রবার রাতে বক্তব্য রাখেননি মামুনুল হক। হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, হেফাজত দেশে কোনো সংঘাত চায় না। তাই এটা আমাদের সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, কেবল বঙ্গবন্ধুরই নয়, দেশে সব ধরনের মূর্তি ও ভাস্কর্য ভেঙে ফেলা হেফাজতের ১৩ দফা দাবির একটি।
হাটহাজারী পার্বতীপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে তিন দিনব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের গতকাল ছিল শেষ দিন। মাহফিল ও আশপাশের এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কোনো কর্মকাণ্ড নেই। সেখানে গত তিন দিনে আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচি দেখা যায়নি। অন্যদিকে গতকাল শেষ দিনে হাটহাজারীর পার্শ্ববর্তী রাউজান ও ফটিকছড়ি থেকে শতাধিক ট্রাক ও গাড়িতে করে লোকজন মাহফিলে আসেন।
আল আমিন ফাউন্ডেশনের নামে ওই তাফসিরুল কোরআন মাহফিল হলেও এর মূল আয়োজক হাটহাজারী বড় মাদ্রাসা বলে খ্যাত দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম। সে হিসেবে এটি হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে পরিণত হয়। গতকাল মাহফিলের শেষ বক্তা ছিলেন হেফাজতের আমির ও হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী।
গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের প্রেসক্লাবে এক সমাবেশ থেকে মামুনুল হককে চট্টগ্রামে প্রতিরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়। গতকাল সকাল থেকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ। এরই মধ্যে সাড়ে আটটার পর বিমানবন্দর এলাকায় নগর যুবলীগ আহ্বায়ক মহিউদ্দীন বাচ্চুর নেতৃত্বে অবস্থান নেন নেতাকর্মীরা।
ছাত্রলীগ তিন ভাগ হয়ে একাংশ বিমানবন্দরের প্রবেশপথে, একটি অংশ দেওয়ানহাট বাইতুশ শরফে এবং অন্য একটি অংশ অক্সিজেন মোড়ে অবস্থান নেয়। চট্টগ্রাম শহর থেকে অক্সিজেন স্টেশন হয়ে হাটহাজারি যেতে হয়। এর বাইরেও এ দুই সংগঠনের নেতাকর্মীরা নগরীর বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে কর্মসূচি পালন করে।
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর বলেন, মামুনুল হক একজন ভীরু কাপুরুষ। তিনি বলেছিলেন আজকে চট্টগ্রাম হয়ে হাটহাজারী যাবেন। কিন্তু তা না করে চোরের মতো রাতের অন্ধকারে এসেছেন। তিনি বলেন, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার পর থেকে আমাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য আজ শুক্রবার রাতে বন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।
হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাসুম ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে সোয়া ১২টার দিকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে হাটহাজারী রোডে যানচলাচল স্বাভাবিক করে দেওয়া হয়। হাটহাজারীতে সব ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।