ফিচার ডেস্ক : ফরাস বা ঝাড়শিম সিলেটে বেশ সমাদৃত সবজি। এর বীজ মুখরোচক খাবার হিসেবে জনপ্রিয়। ঠিক শিমের বীজের মতো না হলেও ফরাসের বীজ অনেকটা তা-ই। শিমের বীজ গোলাকার আর এটি কিছুটা লম্বাকৃতির। এটি ফ্রান্স থেকে প্রথম সিলেটে আসে। এই জন্য এর নাম হয়েছে ফরাস। ফরাস আসলে এক ধরনের ডাল জাতীয় শস্য। ভিন্ন স্বাদের ফরাস সাধারণত মাছ ও মাংসের সঙ্গে রান্না করা হয়। সিলেটের আঞ্চলিক এই খাবারের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে দেশ-বিদেশে।
মূলত ঝাড়শিমই সিলেটে ফরাস হিসিবে পরিচিত। এটি অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ডালজাতীয় শীতকালীন ফসল। এতে প্রোটিনের পরিমাণ প্রায় ২৫-৩০ শতাংশ।
বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের আবহাওয়া শীতকালে শুষ্ক এবং মাটিতে রস থাকায় ফরাসের চাষ সেখানেই সীমাবদ্ধ থাকে। প্রাচীনকাল থেকেই এখানে ফরাস আবাদ হয়। তবে গত এক দশকে এর আবাদ বেড়েছে। সিলেটের গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, বড়লেখা, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে এ সবজি প্রচুর পরিমাণে হয়ে থাকে।
সিলেটের এমন একটি খাবারের প্রস্তুত প্রণালি দেওয়া হলো।
উপকরণ
ফরাসের বিচি : ৭৫০ গ্রাম
পেঁয়াজ কুচি : তিনটি বড় পেঁয়াজ থেকে যা হবে
কাঁচামরিচ : ৫-৬টি
গরম মশলা : ৩-৪টি এলাচ
দারুচিনি : ৪-৫ টুকরো
হলুদ গুঁড়া : আধা চা চামচ
মরিচ গুঁড়া : আধা চা চামচ (ঝাল বুঝে)
লবণ : স্বাদমতো
তেল : পরিমাণ বুঝে
ধনে পাতা : কুচি করা দুই চা চামচ
প্রস্তুত প্রণালি
ফরাসের বিচি ৪-৫ ঘণ্টা আগে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে। এগুলো ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখতে হবে। মূল রান্নার শুরুতে কড়াইতে তেল গরম করে সামান্য লবণ যোগ করে পেঁয়াজ কুচি, কাঁচামরিচ, এলাচ, দারুচিনি ভেজে নিন। এরপর আদা ও রসুন দিন। পেঁয়াজের রং হলদে হয়ে এলে আধা কাপ পানি দিন। গরম হয়ে বুদবুদ বের হলে হলুদ ও মরিচের গুঁড়া দিন। ভেজে তেল উপরে উঠিয়ে নিন। এবার ফরাসের বিচি দিন। ভালো করে মিশিয়ে কয়েক মিনিট মধ্যম আঁচে রেখে দিন। এবার দেড় কাপ পানি দিন। মধ্যম আঁচে ঢেকে রাখুন। ফরাস সিদ্ধ না হলে আরো পানি দিতে পারেন। এবার লবণ চেখে দেখুন। এই সময়ে ধনে পাতার কুচি দিন। এবার পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত। গরম ভাত কিংবা রুটির সাথে বেশ ভালো লাগবে।