নিজস্ব প্রতিনিধি : বাংলাদেশে সহিংসতা থেকে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের রক্ষায় সরকার যথেষ্ট তৎপর নয় বলে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে বুধবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে সহিংসতা থেকে ধর্মীয় সংখ্যালঘুসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে রক্ষায় সরকারি কর্মকর্তা ও পুলিশ ‘প্রায়ই ধীরগতিতে’ কাজ করে। ২০১৪ সালের ঘটনার আলোকে করা ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশে সহিংস ঘটনা তদন্তে কর্তৃপক্ষের ‘অনীহার’ কথাও বলা হয়েছে। বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা বিশেষ করে, হিন্দুরা হামলা ও লুটপাটের শিকার হন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের উপর হামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে এতে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই বছর মে মাসে ১২ বছরের একটি হিন্দু মেয়েকে জোর করে ধর্মান্তরিত করার ঘটনা তদন্ত করতে পুলিশ অনীহা জানায় বলে অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের বরাত দিয়ে এতে বলা হয়, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা কখনো কখনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার উস্কানি দিয়ে থাকেন। এর উদাহরণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রতিবেদনে দুই হিন্দু নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের স্বীকারোক্তি তুলে ধরা হয়েছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে নারীরা ভোট দেওয়ায় তারা ওই ঘটনা ঘটানোর কথা স্বীকার করে বলে এতে বলা হয়। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর সরকার হিন্দুদের উপর হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে বলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বক্তব্য উদ্ধৃত করা হয়েছে এতে। ওয়াশিংটনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেন, বক্তৃতাবাজি নয়, ধর্মীয় স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নিয়ে তা বাস্তবায়নের গুরুত্বের উপর আলোকপাত করাই তাদের এই বার্ষিক প্রতিবেদনের লক্ষ্য। ধর্মীয় স্বাধীনতাহীনতা নয়, বরং এটা রক্ষা করেই সমাজ ভালো করতে পারে-এটা বুঝতে সরকারগুলোকে সহায়তা করাই আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য। মিয়ানমারে কট্টরপন্থি বৌদ্ধদের মুসলিমবিরোধী অবস্থান এবং সেখানে মুসলিম ও খ্রিস্টানদের ওপর বিধি-নিষেধের বিষয়গুলোর উপর আলোকপাত করা হয়েছে প্রতিবেদনে। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে কয়েক ডজন রোহিঙ্গা হত্যাকা-ের বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত না হওয়াকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা বলা হয়েছে এতে। এক পুলিশ কর্মকর্তা খুন হওয়ার জেরে সে সময় ওই হত্যাকা- চালানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।